মণিপুরের ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশ অসমে। ছবি: পিটিআই ।
মণিপুরের নংপোক সেকমাই থানাকে ‘দেশের সেরা’ থানার তকমা দিয়েছিল কেন্দ্রের সরকার। আর তার এক কিলোমিটারের মধ্যেই ঘটে গিয়েছিল মণিপুরের দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানো এবং গণধর্ষণের মতো অপরাধের সেই ঘটনা। ‘গুগল আর্থ’ অনুযায়ী, ঘটনাটি বি ফাইনম গ্রামের অদূরে থৌবল জেলায় নংপোক সেকমাই থানা থেকে মাত্র ৮৫০ মিটার দূরে ঘটেছিল। অন্তর্বর্তী তদন্ত করে এমনটা দাবি করেছে সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-ও। ২০২০ সালে নংপোক সেকমাই থানাকে ‘দেশের সেরা’ থানা হিসাবে বেছে নিয়েছিল কেন্দ্র।
প্রতি বছর কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দেশের মধ্যে সেরা থানা বেছে নেওয়া হয়। বিভিন্ন সূচকের উপর ভিত্তি করে সেই নির্বাচন হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রকাশিত একটি বিবৃতি অনুযায়ী, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং সমাজের দুর্বল শ্রেণির উপর অত্যাচার দমনে থানার ভূমিকার উপর নির্ভর করে সব থেকে বেশি ‘সক্ষম’ থানাকে এই সেরা তকমা দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ীই নাকি ২০২০ সালে কেন্দ্রের তরফে নংপোক সেকমাই থানাকে ‘দেশের সেরা’ থানা বেছে নেওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বুধবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মণিপুরের একটি ভিডিয়ো ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরাচ্ছে উন্মত্ত পুরুষের ভিড়। যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ওই দুই মহিলার মধ্যে এক মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ। মণিপুর পুলিশের দাবি, ছবিটি গত ৪ মে তোলা।
দুই নির্যাতিতার এক জন ইতিমধ্যেই গত ৪ মের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, খুনের ভয় দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা সে দিন তাঁদের জনসমক্ষে পোশাক খুলতে বাধ্য করেছিল। সেই ঘটনায় গত ১৮ মে সাইকুল থানায় ‘জ়িরো এফআইআর’ দায়ের করে খুন, ধর্ষণ-সহ একাধিক অভিযোগ এনেছিলেন নির্যাতিতা। অভিযোগ আনা হয়েছিল ৮০০ থেকে ১০০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় সশস্ত্র দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। কিন্তু সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো ছড়িয়ে না পড়া পর্যন্ত পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।
মণিপুরের ওই ঘটনায় দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মণিপুরের গোষ্ঠীহিংসার সূচনা পর্বেই দুই মহিলা গণধর্ষণ এবং হিংসার শিকার হলেও ৭৭ দিন পরে কেন পুলিশ সক্রিয় হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের দাবি, ঘটনার কয়েক দিন পরেই এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। মণিপুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে পুলিশ চাইলে ওই ছোট্ট এলাকার মধ্যে আরও দ্রুত অপরাধীদের ধরে ফেলতে পারত বলেও দাবি বিরোধীদের।