মণিপুরের মেইতেই বিধায়কেরা। ছবি: টুইটার।
অশান্ত মণিপুরে আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে আসাম রাইফেলস। সে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে মোতায়েন করা এই নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে আগেও পক্ষপাত করার অভিযোগ উঠেছে। এ বার এই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেই রাজ্য থেকে আসাম রাইফেলসকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলল মণিপুরের ৪০ জন মেইতেই বিধায়ক। নিজেদের দাবির কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও লিখেছেন তাঁরা।
চিঠিতে আসাম রাইফেলসের বদলে মণিপুরে কোনও ‘বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তা বাহিনী’ মোতায়েন করার দাবি জানানো হয়েছে। মণিপুর হিংসার গোড়ার দিন থেকেই বার বার বিতর্কে জড়িয়েছে আসাম রাইফেলস। তাদের বিরুদ্ধে কুকিদের মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে মেইতেইরা। মেইতেই সংগঠনগুলির অভিযোগ, আসাম রাইফেলসের প্রত্যক্ষ মদতেই মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ চলছে রাজ্যে। কিছু দিন আগে মণিপুর পুলিশও অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিল আসাম রাইফেলসের বিরুদ্ধে। মেইতেইদের উপরে অত্যাচারে অভিযুক্ত কুকি সংগঠনগুলিকে আড়়াল করায় অভিযুক্ত হয়েছেন আসাম রাইফেলসের আধিকারিকেরা। যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে আসাম রাইফেলস।
কিছু দিন আগেই মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলার মৈরাং লামখাইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পুলিশ চৌকি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আসাম রাইফেলসের জওয়ানদের। তার পরিবর্তে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআরপিএফকে। হিংসাকবলিত মণিপুরে সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক বার আসাম রাইফেলসের বিরুদ্ধে নৃশংস আচরণ করার অভিযোগে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে। বিষ্ণুপুর এবং চূড়াচাঁদপুর জেলায় এই বাহিনীর বিরুদ্ধে মিছিলও হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।