kali Puja 2022

দীপাবলিতে মাটির প্রদীপ জ্বালানোর রঞ্জিতেরা আঁধারেই

আগরতলার নন্দননগরের পালপাড়ার রঞ্জিত রুদ্র পাল, গত ৩০ বছর ধরে তিনি ও তাঁর পরিবার মাটির প্রদীপ তৈরি করছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আগরতলা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১২
Share:

প্রদীপ বানিয়ে বানিয়ে রাখছেন রঞ্জিত পাল। নিজস্ব চিত্র।

আগরতলার নন্দননগরের পালপাড়ার রঞ্জিত রুদ্র পাল, গত ৩০ বছর ধরে তিনি ও তাঁর পরিবার মাটির প্রদীপ তৈরি করছেন। ইদানিংকালে মাটির প্রদীপের চাহিদা অনেক কমে গেলেও মন্দির, উপাসনা স্থান এবং কিছু পরিবার এখনো পরম্পরা মেনে প্রদীপ জ্বেলেই দীপাবলীতে আলোর সজ্জা করে। দীপাবলীতে প্রদীপের আলো জ্বালাবার চাহিদা আগরতলার বাজারগুলিতে ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে। তাই ফের ডাক পড়েছে রঞ্জিতের। আর এই আলো জ্বালানোর কারিগরের নিজের ঘরেই জ্বলে না আলো! ফুটো ছাদ ঘেরা পাতলা পলিথিনের চাদরে, তার মধ্যে দিয়েই প্রকৃতির আলোয় ভাসে, আঁধার হয় তাঁর ঘর।

Advertisement

গত ৩০ বছর ধরে কুমোরের কাজ করেন বলে রঞ্জিতের কাজের চাহিদা আছে। তিনি বলেন, ‘‘পালপাড়ায় আরও নতুন লোক চলে এসেছে। ফলে কিছুটা চ্যালেঞ্জর সামনে পড়তে হচ্ছে।’’ কারিগর বেশি হওয়ায় প্রদীপের যোগান বেশি হচ্ছে। তাঁর আক্ষেপ, এর জন্য দোকানিরা এখন আর আগের মতো দাম দিয়ে প্রদীপ কিনতে চাইছেন না। এমনিতেই বাজারের চাহিদা দিন দিন কমছে। একই আক্ষেপ রঞ্জিত রুদ্র পালের। তিনি বলেন, তাঁর সংসারে স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং বোন রয়েছে। এই পাঁচ জনের পরিবারের প্রতিপালন হয় এই মাটির জিনিস বিক্রি করে। তাঁর মতে, সব জিনিসের যেমন দাম বেড়েছে, প্রদীপ বানানোর মাটি এবং পোড়ানোর জন্যে লাকড়ী এবং খড়ের দামও বেড়ে গিয়েছে। ফলে উপার্জন অনেক কমেছে। বর্তমানে বৈদ্যুতিক বাল্ব ও মোম বাতি জ্বালানোর চল বেড়েছে। তার পরেও কিছু মানুষ পরম্পরা মেনে প্রদীপকেই আঁকড়ে থাকায় টিকে রয়েছে ব্যবসা। রঞ্জিতের আক্ষেপ, ‘‘আগে দেড়শ টাকায় ১০০ প্রদীপ বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এখন মাত্র ৭০ টাকা দিয়ে ১০০টি প্রদীপ বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকাররা আগে বাড়ি থেকে এসে প্রদীপগুলি নিয়ে যেত। এখন ওদের দোকানে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসতে হয়। তার পরেও এক সঙ্গে টাকা পাওয়া যায় না।’’ দিনের পর দিন গাড়ি ভাড়া দিয়ে যেতে হয়। ফলে লাভের মুখ দেখতে পাওয়া খুব কঠিন। এত সব চ্যালেঞ্জের মধ্যে হাতে ঘোরানো চাকে প্রদীপ বানানোর রাস্তা ছেড়ে গত কয়েক বছর ধরে মেশিনের সাহায্যে প্রদীপ তৈরি করছেন রঞ্জিত রুদ্র পাল। বয়সের কারণে এখন বেশি স্পিডে মেশিনও চালাতে পারেন না। উৎপাদন কম, চাহিদা কম, মন্দার বাজার ইত্যাদির কারণে মাটির বাসন ও প্রদীপ বানানোর কারিগর রঞ্জিত রুদ্র পালেরা জীর্ণতা নিয়ে কোনও রকমে বেঁচে আছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement