টাকার জন্য চাপ দিয়ে ৩১টি অচেনা নম্বর থেকে প্রতি দিন নানা ভাবে হুমকি ফোন আসতে শুরু করে ওই ব্যক্তির কাছে। প্রতীকী ছবি।
ঋণপ্রদানকারী অ্যাপের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। সেই ঋণ তাঁকে মেটাতে হল আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে! অদ্ভুত এই ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বইয়ের যোগেশ্বরীতে।
পুলিশ সূত্র খবর, যোগেশ্বরীর এক ব্যক্তি মে মাসে অনলাইনে অ্যাপের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকার ঋণের জন্য আবেদন করেছিলেন। শর্ত হিসেবে তিন মাসের মধ্যে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল।
অভিযোগ, টাকা পাওয়ার পাঁচ দিন পর থেকেই ওই ব্যক্তির কাছে বিভিন্ন অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসা শুরু হয়। যত বারই তিনি ফোন রিসিভ করেছেন, তত বারই তাঁকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে তাড়াতাড়ি টাকা শোধ না করলে তাঁর ছবি বিকৃত করে পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুবান্ধবের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। বার বার একই হুমকি ফোন পেয়ে সেই ঋণ শোধ করতে ওই ব্যক্তি অন্য একটি ঋণপ্রদানকারী অ্যাপ থেকে চ়ড়া সুদে ঋণ নেন।
ভেবেছিলেন, টাকা শোধ করে নিস্তার পাবেন। কিন্তু তা তো হলই না, উল্টে হুমকি ফোনের সংখ্যা আরও বেড়ে গেল। দ্বিতীয় বার যে অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন, দু’দিন পর থেকেই ওই ঋণ শোধ করার জন্য চাপ দিয়ে ফোন আসা শুরু করে। ওই ব্যক্তির দাবি, ঠিক একই কায়দায় তাঁকে হুমকি দেওয়া শুরু হয়। ঋণ শোধের চক্করে পড়ে ক্রমে প্রতারকদের জালে ফাঁসতে শুরু করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় বার নেওয়া ঋণ শোধ করতে আরও একটি অ্যাপ ব্যবহার করে ঋণ নেন। এ ভাবে ১০ হাজার টাকা শোধ করতে গিয়ে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ফেলেন। মোট ছ’টি অ্যাপ ব্যবহার করে এই টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু তাতেও রেহাই মেলেনি। ৩১টি অচেনা নম্বর থেকে প্রতি দিন নানা ভাবে হুমকি ফোন আসতে শুরু করে। এ ভাবে ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ে যখন তিনি হাঁফিয়ে উঠেছেন, ফোনে তাঁকে বলা হয়, আসল এবং সুদ মিলিয়ে আড়াই লক্ষ টাকা ঋণ শোধ করতে হবে। এ কথা শুনে ওই ব্যক্তি যখন টাকা দিতে অস্বীকার করেন, তখন তাঁর ছবি বিকৃত করে পরিবারের সদস্য, আত্মীয় এবং বন্ধুবান্ধবের কাছে ছড়িয়ে দেন প্রতারকরা। ওই ব্যক্তি বলেন, “এ ভাবে বিকৃত ছবি আমার পরিবার এবং পরিচিতদের কাছে পৌঁছে যাওয়ায় আরও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। শেষমেশ এক বন্ধুর কাছ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ধার করে সেই টাকা শোধ করি।”
এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ব্যক্তি। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ক্রেজিবি, ক্যাশ অ্যাডভান্স, ডাভ ক্যাশ, ট্র্যাকও, অনস্ট্রিম, পাপা মানি, শাটল লোন— এই ছ’টি অ্যাপ ব্যবহার করে ঋণ নিয়েছিলেন অভিযোগকারী। পুলিশ জানিয়েছে, যে ৩১টি নম্বর থেকে ফোন আসছিল সেগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশ পরামর্শ দিয়েছে, এই ধরনের অ্যাপগুলি যেন কোনও ব্যক্তি ব্যবহার না করেন।