চোখের সামনে মা এবং স্ত্রীকে নগ্ন করে রাস্তায় হাঁটিয়েছিলেন। পনেরো বছর ধরে বয়ে বেড়ানো সেই অপমানের ‘বদলা’ নিলেন এক ব্যক্তি। অভিযুক্তকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। উত্তরপ্রদেশের লখউয়ের ঘটনা।
সাল ২০০৭। দুই প্রতিবেশী হয়ে উঠেছিলেন চরম প্রতিদ্বন্দ্বী। এক জন ব্লক উন্নয়ন পর্ষদের সদস্য। অন্য জন ঠিকাদার। এক জন রামজীবন লোধি। অন্য জন শিব যাদব ওরফে শামশের। শনিবার রাস্তায় লোধিকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে শামশেরের বিরুদ্ধে। কাজের সূত্রে এক জন আর এক জনের পথের ‘কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ফলে শত্রুতার সূত্রপাত কাজকে কেন্দ্র করেই। ২০০৭ সালে সেই শত্রুতা চরমে পৌঁছয়।
লখনউয়ের অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার চিরঞ্জীব নাথ এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ২০০৭-এ একটি জমিকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। শামশেরকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে তাঁর চোখের সামনে তাঁর মা এবং স্ত্রীকে নগ্ন করে রাস্তায় হাঁটানোর অভিযোগ ওঠে লোধির বিরুদ্ধে। শামশেরের বয়স তখন ২৬। অসহায় ভাবে সেই দৃশ্য দেখতে হয়েছিল তাঁকে। সে সময় লোধির বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে না পারলেও, সেই অপমানের বদলা নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন শামশের।
সেই ঘটনার পর শামসের তাঁর পরিবার নিয়ে অন্যত্র চলে যান। তার পর ১৫ বছর কেটে গিয়েছে। শামশেরের এখন বয়স ৪১। এত বছর কেটে গেলেও প্রতিশোধের প্রতিজ্ঞা কিন্তু ভুলে যাননি তিনি। তিনি স্থির করেছিলেন ছেলের বয়স ১৫ হলে তবেই সেই বদলা নেবেন। গত ১৫ নভেম্বর শামশেরের ছেলে পনেরোতে পা দেয়। ফলে ১৫ বছরের বদলার অপেক্ষার অবসান হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, লোধি কোথায়, কখন যাচ্ছেন তার রেইকি করা শুরু করেন শামশের। বেশ কয়েক মাস ধরে লোধির গতিবিধির উপর নজর রাখেন। গত শনিবার সেই সুযোগও এসে যায়। এলাকার চৌধরি মহল্লার কাছে লোধিকে একা পেয়ে যান শামশের। তাঁকে লক্ষ্য করে পর পর তিনটি গুলি করেন শামশের। গুলি করার আগে লোধিকে ১৫ বছর আগের সেই ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেন। লোধিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।