চন্দ্রযান-৩। —ফাইল চিত্র।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করেছে তৃতীয় চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম। বৃহস্পতিবার ভোরে ল্যান্ডার বিক্রম থেকে চাঁদের মাটিতে নেমে আসে রোভার প্রজ্ঞান। হাঁটি হাঁটি পা পা করে প্রজ্ঞান রোভার এখন চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রজ্ঞান। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর সাফল্যে গর্বিত দেশবাসী। কিন্তু এই পরিস্থিতির সুযোগ নেন গুজরাতের নিবাসী মিতুল ত্রিবেদী। চাঁদের মাটিতে বিক্রম ল্যান্ডারের পাখির পালকের মতো অবতরণের (সফ্ট ল্যান্ডিং) পর মিতুল স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন যে বিক্রম তৈরির নেপথ্যে তাঁর অবদান রয়েছে।
মিতুলের দাবি, বিক্রম ল্যান্ডারের প্রাথমিক নকশা তৈরি করেছেন তিনিই। ইসরোর নিয়োগপত্রও প্রমাণ হিসাবে দেখান মিতুল। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে নিজেকে ইসরোর বিজ্ঞানী হিসাবে দাবি করলে বিষয়টি গুজরাত পুলিশের নজরে আসে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ভুয়ো নিয়োগপত্র তৈরি করেছেন মিতুল। ভারতীয় আইন অনুযায়ী মিতুলের বিরুদ্ধে সুরাতের অপরাধ দমন শাখা জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার মিতুলকে গ্রেফতার করে সুরাত পুলিশ।
ভুয়ো ‘ইসরোর বিজ্ঞানী’ মিতুল ত্রিবেদী। ছবি: সংগৃহীত।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার বিক্রম ল্যান্ডার অবতরণের পর মিতুল একাধিক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে ইসরোর বিজ্ঞানী হিসাবে নিজের পরিচয় দেন। সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় মিতুল জানান, তিনি তৃতীয় চন্দ্রযানের বিক্রম ল্যান্ডারের নকশা তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রমাণ হিসাবে ভুয়ো নিয়োগপত্রও দেখান তিনি। সেই নিয়োগপত্রে লেখা রয়েছে, ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ইসরোর ‘অ্যানসিয়েন্ট সায়েন্স অ্যাপ্লিকেশন ডিপার্টমেন্ট’-এর সহকারী চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করা হয় মিতুলকে। এমনকি মিতুল যে ইসরোর ‘স্পেস রিসার্চ মেম্বার’ তারও প্রমাণ দেন তিনি।
মিতুল দাবি করেন মঙ্গল গ্রহ সংক্রান্ত ইসরোর পরবর্তী গবেষণার সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে পুলিশ জানায়, নিজেকে ইসরোর বিজ্ঞানী বলে দাবি করে প্রতিষ্ঠানের সম্মান খর্ব করার চেষ্টা করেছেন মিতুল। তিনি যে কোনও ভাবেই ইসরোর সঙ্গে যুক্ত নন তার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। ভুয়ো নিয়োগপত্র তৈরি করে নিজেকে ইসরোর বিজ্ঞানী হিসাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছিলেন মিতুল। বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন তিনি।