জলিস আনসারি। —ফাইল চিত্র
তিনি ছিলেন বোমা বিশেষজ্ঞ। কোন বিস্ফোরক কতটা পরিমাণে ও কী ভাবে মেশালে কতটা জোরালো বিস্ফোরণ হবে, সে সব ছিল তার নখদর্পনে। সেই কারণেই তার নাম ছিল ‘ডক্টর বম্ব’। এ হেন ১৯৯৩ মুম্বই বিস্ফোরণের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী জলিস আনসারি (৬৮) আচমকাই নিখোঁজ হয়ে গেল। প্যারলে ছাড়া পাওয়ার পর এ ভাবে গায়েব হয়ে যাওয়ায় ঘুম উড়ে গিয়েছে মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ ও রাজস্থান পুলিশের কর্তাদের।
১৯৯৩ মুম্বই বিস্ফোরণ মামলায় জলিস আনসারির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। দক্ষিণ মুম্বইয়ের এগরিপাড়া এলাকার বাসিন্দা জলিস রাজস্থান সেন্ট্রাল জেলে বন্দি ছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি ২১ দিনের প্যারলে ছাড়া পেয়েছিল সে। ছাড়া পাওয়ার পর প্রতিদিন মুম্বইয়ের এগরিপদা পুলিশ স্টেশনে সকাল সাড়ে ১০টায় হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। প্রতিদিন নিয়ম করে সেটা করছিলও সে। আজ শুক্রবারই জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করার কথা ছিল।
কিন্তু বিপত্তি ঘটে তার আগের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার। সে দিন আর হাজিরা দিতে যায়নি জলিস আনসারি। বিকেলে তার ছেলে জাইদ আনসারি থানায় গিয়ে জানান, তাঁর বাবা নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। তিনি জানান, সকালে নমাজ পড়তে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু তার পর আর বাড়িতে ফেরেননি। সেই অনুযায়ী এগরিপদা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এনপিআর বৈঠকে আজ নেই বাংলা
আরও পড়ুন: অপ্রকৃতিস্থ চালক, স্টেশন পেরিয়ে ছুটল ট্রেন
আর তার পর থেকেই হন্যে হয়ে তাকে খুঁজছে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ ও সন্ত্রাস দমন শাখার পুলিশকর্তারা। সমস্ত থানায় পাঠানো হয়েছে সতর্কবার্তা। শুধু মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণই নয়, আরও কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনাতেও জলিসের নাম জড়িয়েছে। ২০০৮ সালের মুম্বই বিস্ফোরণের তদন্তের সূত্রে ২০১১ সালে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল এনআইএ। সিমি এবং ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তার যোগ পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। কিন্তু সেই ‘ডক্টর বম্ব’ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় এখন দুশ্চিন্তা বেড়েছে পুলিশ কর্তাদের। অন্য কোনও হামলার পরিকল্পনা রয়েছে কি না বা নতুন করে জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোথাও গা ঢাকা দিলেন কি না, তেমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা।