প্রতীকী ছবি।
প্রতারণা কত রকমের হয়! কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আস্ত একটা শাখা খুলে প্রতারণার চেষ্টার ঘটনা এ পর্যন্ত ঘটেছে বলে মনে করতে পারছেন না দুঁদে গোয়েন্দারাও। কিন্তু সেই নজিরবিহীন কাণ্ডই ঘটল তামিলনাড়ুতে। শেষ পর্যন্ত ‘কার্যসিদ্ধি’ হয়নি। তার আগেই পুলিশের জালে ১৯ বছরের যুবক। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)-র শাখা খোলার চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনা তামিলনাড়ুর কাছে পানরুতি এলাকায়। নিজের বাড়ির দোতলাতেই ব্যাঙ্ক খোলার পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন ওই যুবক। সেই মতো টাকা জমা দেওয়া ও তোলার চালান ছাপানো হয়েছিল। বসেছিল কম্পিউটার, প্রিন্টার এমনকি টাকা গোনার মেশিন পর্যন্ত। নকল সিলও বানিয়ে ফেলেছিল ওই যুবক। শুধু বাকি ছিল সামনে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার বোর্ড লাগানো। তবে এখনও পর্যন্ত প্রতারণার কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কী ভাবে ধরা পড়ল এই কীর্তিমান যুবক? পানরুতিতে একটি এসবিআই-এর শাখা রয়েছে। ওই শাখারই এক গ্রাহকের কাছে ম্যানেজার খবর পান যে একটি শাখা খোলার চেষ্টা চলছে। তিনি পুলিশকে খবর দেওয়ার পর ওই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় ভুয়ো সিল, চালান, টাকা গোনার মেশিনের মতো যাবতীয় জিনিসপত্র।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের বাবা এবং মা দু’জনেই এসবিআই-এ কর্মরত ছিলেন। কিন্তু বাবা কর্মরত অবস্থায় মারা যান। মা সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। তার পর থেকেই ব্যাঙ্কে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সফল হননি।
আরও পড়ুন: কেরলে সোনা পাচারকাণ্ডে স্বপ্না সুরেশকে গ্রেফতার করল এনআইএ
তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জানিয়েছেন, বাবা-মা ব্যাঙ্কে চাকরি করায় ব্যাঙ্কের কাজকর্ম কী ভাবে হয়, তার মোটামুটি একটা ধারণা ছিল ওই যুবকের। সেই ভাবনা থেকেই ব্যাঙ্ক খোলার পরিকল্পনা করে এবং সেই মতো ভুয়ো সিল, চালান ও অন্যান্য জিনিসপত্র তৈরি করে বাড়ির দোতলাকে একটি ব্যাঙ্কের চেহারা দেয়। কাউকে প্রতারণা করেছে কি না, সে প্রশ্নের উত্তরে পানরুতি থানার ওসি কে আম্বেথকর বলেন, ‘‘আমরা এখনও তেমন কোনও অভিযোগ পাইনি।’’ আবার ওই যুবকের মায়ের চলাফেরায় সমস্যা রয়েছে। তাই দোতলায় ওঠার ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল। তিনি জানিয়েছেন, বাড়ির দোতলায় এই সব কর্মকাণ্ড চলছে বলে তিনি কিছুই টের পাননি।
আরও পড়ুন: ‘কোণঠাসা’ পায়লট দিল্লিতে, রাজস্থান নিয়ে দুশ্চিন্তায় কংগ্রেস হাইকম্যান্ড
তবে তদন্তকারী অফিসাররা প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন, ব্যাঙ্কে চাকরি না কিছুটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল ওই যুবক। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে যে সব উত্তর দিয়েছেন, তাও ছিল কিছুটা অসংলগ্ন। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘উনি খুব শান্ত ও দৃঢ় ভাবে বলেছেন যে মুম্বই থেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিলেন। সেই অনুমোদন পেলেই সাইনবোর্ডও টাঙাতেন।’’