প্রতীকী ছবি।
গ্রামের একটি চক-কে নরেন্দ্র মোদীর নামে নামকরণ করায় এক বৃদ্ধকে মাথা কেটে খুন করল দুষ্কৃতীরা। নিহতের নাম রামচন্দ্র যাদব (৭০)। তিনি এলাকার এক বিজেপি কর্মীর বাবা। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে বিহারের দ্বারভাঙা জেলার ভাদাবন গ্রামে।
স্থানীয সূত্রে খবর, বছর দু’য়েক আগে রামচন্দ্র ওই গ্রামেরই একটি জায়গার নাম দিয়েছিলেন ‘নরেন্দ্র মোদী চক’। ওই নামে একটা সাইনবোর্ডও লাগিয়ে দিয়েছিলেন জায়গাটিতে। ঝামেলার সূত্রপাত এই নামকরণকে কেন্দ্র করেই।
নিহতের ছেলে কমলেশ যাদবের অভিযোগ, ওই দিন সকালে ৪০-৫০ জনের একটি দল তাঁদের গ্রামে আসে। হুমকি দেয় মোদীর নাম লেখা সাইনবোর্ড খুলে ফেলতে হবে। জায়গার নাম পরিবর্তন করে ‘লালু প্রসাদ চক’ করতে হবে। দুষ্কৃতীদের চোখরাঙানিতে না দমে রুখে দাঁড়ান কমলেশ ও তাঁর বাবা রামচন্দ্র। তাঁদের মধ্যে একপ্রস্থ বচসাও হয়। বিষয়টি তখনকার মতো থেমে যায়। কমলেশ গ্রামের এক জন সক্রিয় বিজেপি কর্মী।
আরও পড়ুন: হকিং মানতেন বেদ এগিয়ে: বিজ্ঞান মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন
আরও পড়ুন: অসন্তুষ্ট সব শরিকই চন্দ্রগ্রহণে ছায়া পদ্মে
কমলেশ পুলিশকে জানান, ভেবেছিলেন বিষয়টা ওখানেই থেমে গিয়েছে। কিন্তু রাতে ফের ওই দুষ্কৃতীরা বাইকে করে তাঁদের বাড়িতে আসে। তাদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি, তলোয়ার ছিল। তারা ফের হুমকি দেয় জায়গার নাম পরিবর্তন করার জন্য। কিন্তু এ বারও প্রতিবাদ করেন বাবা-ছেলে। তখনই তাঁদের উপর চড়াও হয় জনা পঞ্চাশের ওই দুষ্কৃতী দলটি। লাঠি দিয়ে বাবা-ছেলেকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এর পর ছেলের সামনেই রামচন্দ্রকে কুপিয়ে খুন করে মাথা কেটে নেয় দুষ্কৃতীরা। বাবাকে বাঁচাতে গেলে দুষ্কৃতীরা তাঁকেও মেরে ফেলার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ কমলেশের। কিন্তু তিনি সেখান থেকে কোনও রকমে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান। কমলেশের আরও অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা আরজেডি-র সমর্থক। দু’দিন আগেই উপনির্বাচনে আরজেডি জেতে। আর তারই পরই এই হামলা চালানো হয়।
যদিও এটা কোনও রাজনৈতিক হামলা নয় দাবি করেছে পুলিশ। দ্বারভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দিলনওয়াজ আহমেদ জানান, যেখানে রামচন্দ্র সাইনবোর্ডটি লাগিয়েছিলেন, সেটি একটি বিতর্কিত জমি। এই জমি নিয়ে ঝামেলা দীর্ঘ দিন ধরেই। সেই পুরনো শত্রুতার জেরেই এই হামলা চালানো হয়েছে।
বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদীও এটাকে রাজনৈতিক হামলা বলতে চাননি। শুক্রবার রাতেই তিনি টুইট করে বলেন, “মোদী চক নামকরণের কারণে দ্বারভাঙাতে খুনের ঘটনা ঘটেছে, এটা মোটেই সত্য নয়। জমিকে কেন্দ্র করেই ঝামেলার সূত্রপাত। সাইনবোর্ডটি অনেক আগেই টাঙানো ছিল, খুনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই।”