মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সনিয়া গাঁধী।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) নামে বিভাজনের কৌশল নিয়েছে বিজেপি। এই অভিযোগ সামনে রেখে সব বিরোধী দল তাদের সাধ্যমতো আন্দোলন চালিয়ে যাবে, এই অঙ্গীকারই উঠে এল ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের শপথ অনুষ্ঠানের অবসরে। রাঁচীতে ওই শপথ-মঞ্চে রাহুল গাঁধীদের পাশাপাশি অন্যতম মুখ্য চরিত্র ছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সব বিরোধী দলকে এক সুরে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে যে চিঠি দিয়েছিলেন মমতা, তার জবাব দিয়ে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গেই একমত হয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। রাঁচীতে রবিবার সনিয়া ছিলেন না। কিন্তু চিঠি লিখে মমতাকে তাঁর সমর্থন এবং অন্যান্য বিরোধী নেতৃত্বের সহমত হওয়া বর্তমান পরিস্থিতিতে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) এবং কংগ্রেসের জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হেমন্তের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এ দিন হাজির ছিলেন দেশের প্রায় সব অ-বিজেপি দলের প্রতিনিধিরা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতার পাশেই ছিলেন ছত্তীশগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র বঘেল, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, তামিলনাড়ুর ডিএমকে-র সভাপতি এম কে স্ট্যালিন ও তাঁর সাংসদ-বোন কানিমোঝি। ছিলেন সিপিএম ও সিপিআইয়ের দুই সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং ডি রাজা, আরজেডি-র তেজস্বী যাদব, এলজেডি-র শরদ যাদব প্রমুখ। আনুষ্ঠানিক কোনও বৈঠকের অবকাশ সচরাচর এই ধরনের অনুষ্ঠানে থাকে না। তবে বিজেপি-বিরোধী ঐক্যের ছবি তুলে ধরার জন্য এ দিনের মঞ্চকে ব্যবহার করার চেষ্টায় কসুর করেননি বিভিন্ন দলের নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: এনআরসিতে এনপিআর তথ্য! গুলিয়ে দিলেন রবিশঙ্করও
বিরোধী নেতা-নেত্রীদের আলাপচারিতায় উঠে এসেছে, নাগরিরত্ব আইন এবং এনআরসি-র বিরোধিতায় সব দলই প্রতিবাদ চালিয়ে যাবে। জাতীয় স্তরে কখনও অভিন্ন মঞ্চ থেকে প্রতিবাদের প্রয়োজন হলে বিরোধী নেতারা সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন। মমতার সঙ্গে কথা হয়েছে স্ট্যালিন, গহলৌত, রাজাদের।
বিরোধী শক্তির এই বাতাবরণকেই মজবুত করার কথা সনিয়া লিখেছেন মমতাকে শনিবার পাঠানো জবাবি চিঠিতে। নাগরিকত্ব আইন এনে এবং এনআরসি চালু করতে চেয়ে মোদী সরকার ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ পথে এগোচ্ছে বলে মমতার যুক্তিতে সহমত হয়েছেন তিনি। সনিয়া লিখেছেন, ‘আমাদের প্রতিবাদ হবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ। সংবিধানের উপরে এই দুঃসাহসী ও নির্লজ্জ আক্রমণকে আমরা বিনা প্রতিরোধে মেনে নিতে পারি না’। মমতাকে তাঁর বার্তা, তৃণমূল নেত্রী ও অন্যান্য সমমনোভাবাপন্ন নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই তাঁরা এগোতে চান।
আরও পড়ুন: মোদীর ‘মন কি’- উদ্বেগ ছাত্রযুবরাই!