ফাইল ছবি
জনজাতি সম্প্রদায় থেকে প্রথম বার কাউকে রাষ্ট্রপতি করার পরে এ বার স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে জনজাতি সম্প্রদায়ের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ভূমিকা তুলে ধরার উপরে জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর মতে, স্থানীয় স্তরে আদিবাসী জাদুঘর তৈরি করে আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানানো উচিত।
দেশ জুড়ে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে জাতীয় কমিটি তৈরি হয়েছিল, শনিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে তার তৃতীয় বৈঠক হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই বৈঠকে যোগ দেন। সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই এই কমিটির সদস্য। কিন্তু এ দিনের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুই বলার সুযোগ পাননি বলে সূত্রের খবর। তাঁর নাম এ দিনের বৈঠকে বক্তার তালিকায় ছিল না। তিনি ঘনিষ্ঠ শিবিরে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার নিজের মতো স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছে। কিন্তু স্বাধীনতার আন্দোলনে বাংলা ও পঞ্জাবের অবদান সবথেকে বেশি। তার স্বীকৃতি কোথায়!
কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের পাল্টা দাবি, এই জাতীয় কমিটিতে আড়াইশোর বেশি সদস্য। সবাইকে একই দিনে বৈঠকে বলতে দেওয়া সম্ভব নয়। এ দিনের বৈঠকে যেমন অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে অশোক গহলৌত, নবীন পট্টনায়ক বক্তব্য রেখেছেন। সবে কমিটির তৃতীয় বৈঠক হল। আরও বৈঠক হবে। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রী এ দিনও বৈঠকে সকলকে অনুরোধ জানিয়েছেন, অমৃত মহোৎসব নিয়ে কারও কোনও পরামর্শ থাকলে তাঁকে জানাতে। রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, প্রথমে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক, তার পরে শনিবার অমৃত মহোৎসবের বৈঠক, এর পরে রবিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে টানা তিন দিন মমতা প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হচ্ছেন। বিরোধীদের ‘সেটিং’-এর অভিযোগের মুখে তিনি এখন ‘আমাকে বলতে দেওয়া হয়নি’ বলে অনুযোগ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী এ দিনের বৈঠকে অমৃত মহোৎসবকে তরুণ প্রজন্মের ‘সংস্কার উৎসব’ হিসেবে পালন করার কথা বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, দেশপ্রেমের আবেগ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। রাষ্ট্রনির্মাণের ক্ষেত্রে তরুণদের সঙ্গে আত্মিক যোগাযোগ তৈরির এটা সুবর্ণ সুযোগ। একইসঙ্গে তিনি আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি করার মতো এ ক্ষেত্রেও মোদীর পাখির চোখ আদিবাসী অধ্যুষিত লোকসভা আসন। কারণ এ সব এলাকায় বিজেপি ভোটের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। গত বছর মার্চে এই জাতীয় কমিটি তৈরি হয়েছিল। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, এখনও পর্যন্ত স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালনে ৬০ হাজারের বেশি অনুষ্ঠান হয়েছে।