বিজেপি বিরোধীদের জোটের ডাক ফাইল চিত্র
লোকসভা ভোটের আগে জাতীয় স্তরে বিরোধী ঐক্য গঠনে আরও এক পা এগোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের একত্রিত করতে এ বার বৈঠকের প্রস্তাব দিলেন তিনি। এই প্রসঙ্গেই শনিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, ‘‘জোট বাঁধো, তৈরি হও।’’
এ রাজ্যের নির্বাচনের ফলে গোটা দেশেই তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক গুরুত্ব বেড়েছে অনেকটা। সেই সূত্রে জাতীয় স্তরে বিরোধী ঐক্য নিয়ে এ বার গোড়া থেকেই সক্রিয় মমতা। জোট গঠনের লক্ষ্যে দিল্লিতে যে বৈঠক হয়েছে, তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনিই। সেই প্রক্রিয়া আরও এক পা এগিয়ে নিতে তিনি এ দিন বলেন, ‘‘দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিচ্ছে। আমি সব মুখ্যমন্ত্রীকে (অবিজেপি সরকারের) নিয়ে বৈঠক ডাকতে চাই।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা ও প্রতিহিংসা নিয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের অভিজ্ঞতাও একই রকম বলে এ দিন দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘কেন্দ্রে এখন গোলি আর গালি’র সরকার।’’ এ দিন ফের এক বার বিরোধী ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন মমতা।
অবিজেপি জোট গঠনের এই উদ্যোগ নিয়ে এ দিন তৃণমূল নেত্রীকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো দিল্লি গেলেন। ম্যাডামের (কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী) বাড়িতে চা-ও খেলেন। এত বার বার্তা দিচ্ছেন অথচ ওঁর ( মুখ্যমন্ত্রী) ডাকে সাড়া দিয়ে কেউ আসছেন না কেন? তার মানে কারও কাছেই ওঁর গ্রহণযোগ্যতা নেই।’’
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আরও বলেন, ‘‘কেন্দ্রের এই সরকার তাণ্ডবের সরকার, দানবীয় সরকার।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিজেপি কাউকে কথা বলতে দেবে না। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, আইএএস-আইপিএস সকলের কণ্ঠরোধ করছে। পেশিশক্তি দিয়ে সকলের কন্ঠরোধ করে দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে।’’ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বিজেপির তৈরি এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান তরুণদের প্রতি। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী এ রাজ্যে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি। অন্যান্য রাজ্যে কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়েও একই জিনিস চলছে। ছাত্রছাত্রীদের এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে।’’
সারা দেশে ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ ও যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ধ্বংসের অভিযোগে অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকের প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে সিপিএমও। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা আর রাজ্যের হাতে অধিক ক্ষমতার দাবিতে অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের এই বৈঠক হতেই পারে। আমরা তো বরাবরই সে এই দাবির পক্ষে।’’ পাশাপাশি এ নিয়ে মমতার অতীত অবস্থানের প্রসঙ্গ টেনে সুজনবাবু বলেন, ‘‘তিনি যখন বিরোধী নেত্রী ছিলেন তখন এ রাজ্যে সরকারের হাতে অর্থ না দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি লিখেছিলেন। তা মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের বক্তব্যের সঙ্গে মেলে না।’’