মল্লিকার্জুন খড়্গে। —ফাইল চিত্র।
হরিয়ানা বিধানসভায় জয়ের পরে কংগ্রেস দল ‘শহুরে নকশাল’দের মানসিকতায় প্রভাবিত বলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ বিজয়া দশমীর দিনে পাল্টা আক্রমণে বিজেপিকে ‘সন্ত্রাসবাদীদের দল’ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। পাশাপাশি হরিয়ানা নির্বাচনের ফল গণনার সময়ে অন্তত কুড়িটি কেন্দ্রে কারচুপি হয়েছে এমন অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আগামী ১৭ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় বার শপথ নিতে চলেছেন হরিয়ানার বিজেপি বিধায়ক নায়েব সিংহ সাইনি। যদিও ওই ফলাফল ঘিরে দু’শিবিরের লড়াই এখনও জারি রয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, অন্তত কুড়িটি বিধানসভায় গণনা চলাকালীন ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার নাম করে কারচুপি চালানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রথমে গত বুধবার ও তার পরে গত কাল এ নিয়ে বিস্তারিত অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কথায়, ‘‘সব মিলিয়ে কুড়িটি বিধানসভায় কারচুপির অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে কমিশনের কাছে। আমরা আশা করব কমিশন বিষয়টি নিয়ে যথাযথ নির্দেশ জারি করবে।’’ কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, দল আশা করছে কমিশন উপযুক্ত পদক্ষেপ করে ওই কুড়িটি বিধানসভার সমস্ত ইভিএম সংরক্ষণ করে তা সিল করে করে দেওয়ার নির্দেশ জারি করবে। দল এও আশা করছে নির্বাচন কমিশন একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দেবে। কংগ্রেসের ওই অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ সুধাংশু ত্রিবেদীর কটাক্ষ, ‘‘হরিয়ানায় অপ্রত্যাশিত ভাবে হেরে যাওয়ার ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের মধ্যেই এখন এ নিয়ে দোষারোপ শুরু হয়েছে। তাই নজর ঘোরাতে নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করার কৌশল নিয়েছে বিরোধী দল।’’
এ দিকে হরিয়ানার জয়ের পরে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তরজায় জড়িয়ে পড়েছে দু’দল। গত মঙ্গলবার ফলাফলের পরে কংগ্রেসকে ‘শহুরে নকশাল’ মানসিকতায় প্রভাবিত একটি দল যারা ভারতের ক্ষতি করতে তলে তলে সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ করেন মোদী। তিনি অভিযোগে বলেন, আন্তর্জাতিক শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতকে দুর্বল করতে সক্রিয় রয়েছে কংগ্রেস। আজ সেই অভিযোগের জবাবে মুখ খুলে কংগ্রেস সভাপতি খড়্গে বলেন, ‘‘বিজেপি সন্ত্রাসবাদীদের দল। যারা জনজাতি সমাজের মানুষকে পিটিয়ে মারে, তাঁদের ধর্ষণ করে। আসলে যারা উদার ও আধুনিকমানসিকতার তারা বিজেপির কাছে শহুরে নকশাল। অথচ বিজেপির সমর্থকেরা জনজাতি ও পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষের উপরে অত্যাচার চালিয়ে চলেছে। যে রাজ্যেই বিজেপির সরকার রয়েছে সেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। নরেন্দ্র মোদীর এ নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকার নেই। কারণ তিনি এ ধরনের অত্যাচার বন্ধ করতে ব্যর্থ।’’ পাল্টা জবাবে বিজেপি সাংসদ সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, ‘‘এরা নিজেদের উদার মানসিকতার লোক বলছে। সেই কারণেই কি এঁরা মুসলিমদের চারটি বিয়ে, তিন তালাক, হিজাব পরাকে সমর্থন করেন? এ সব কি উদার মানসিকতার লক্ষণ?’’