বাবা-মা আকাশে উধাও, উড়ান সংস্থার ক্ষতিপূরণ দুই খুদেকে

মিরভ-মাইলসের ঠাকুরদা মলয় মুখোপাধ্যায় আমেরিকার শিকাগো আদালতে মামলা ঠুকেছিলেন। সেই মামলা স্থানান্তরিত হয় ওয়াশিংটন আদালতে। এত দিন পরে সেই মামলার রায় বেরিয়েছে।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৩
Share:

মিরভ ও মাইলস মুখোপাধ্যায়।

মাঝ আকাশে হারিয়ে গিয়েছেন তাদের বাবা-মা। তা-ও নয় নয় করে পাঁচ বছর হল। ১১ বছরের মিরভ আর সাত বছরের মাইলস মুখোপাধ্যায়ের সেই ক্ষতি যে অপূরণীয়, তা মেনে নিয়ে তাদের বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিল মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স।

Advertisement

মিরভ-মাইলসের ঠাকুরদা মলয় মুখোপাধ্যায় আমেরিকার শিকাগো আদালতে মামলা ঠুকেছিলেন। সেই মামলা স্থানান্তরিত হয় ওয়াশিংটন আদালতে। এত দিন পরে সেই মামলার রায় বেরিয়েছে। ২০১৪ সালের ৮ মার্চ মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের উড়ান (এমএইচ৩৭০)-এ কুয়ালা লামপুর থেকে বেজিং যাচ্ছিলেন মুক্তেশ মুখোপাধ্যায় ও তাঁর চৈনিক স্ত্রী জিয়ামো। মিরভ-মাইলসের বাবা-মা। সেই উড়ানে বাঙালি ছিলেন একমাত্র মুক্তেশই। মাঝ আকাশ থেকে রহস্যজনক ভাবে হারিয়ে যায় বিমানটি। কী ভাবে কোথায় উধাও হয়ে গেল বিমানটি, নির্দিষ্ট ভাবে এখনও কেউ তা জানেন না। ইতিউতি কিছু ধ্বংসাবশেষ পেয়ে তাকে এমএইচ৩৭০ বিমানের অংশ বলে বলা হলেও তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

মলয়বাবুর ভাই মিলন মুখোপাধ্যায় কলকাতার আইনজীবী। তিনি জানান, দিল্লির আদালত থেকে মিরভ-মাইলসের অভিভাবক হিসেবে মলয়বাবুকে মেনে নেওয়া হয়েছে। দুই নাতিকে নিয়ে মলয়বাবু এবং তাঁর স্ত্রী উমাদেবী এখন দিল্লিতে থাকেন। পাঁচ বছরের পুরনো সেই ঘটনার কথা স্মৃতিতে নেই মাইলসের। তবে মিরভ এখনও মাঝেমধ্যে বাবা-মাকে খোঁজে। মিলনবাবু বলেন, ‘‘ঘটনার পরে আমরা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। সময় লেগেছিল মেনে নিতে। মুক্তেশ শিকাগোয় থাকত। তাই সেখানকার আদালতেই মামলা করা হয়। কিন্তু মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সই মামলাটিকে ওয়াশিংটনে সরাতে অনুরোধ করে। আমরা মেনে নিই।’’

Advertisement

মিলনবাবু জানান, এ দেশের কেউ নিখোঁজ হয়ে গেলে ন্যূনতম সাত বছর অপেক্ষা করা হয়। তার পরে আদালতের দ্বারস্থ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করে আদালত। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ওই এমএইচ৩৭০ বিমানের ২২৭ জন যাত্রী এবং ১০ বিমানকর্মীকে ইতিমধ্যে মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।

দুই নাতির ক্ষেত্রে মলয়বাবুর অভিভাবকত্ব মেনে নিয়েছেন বেজিংয়ের বাসিন্দা জিয়ামোর বাবা-মা। তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে মিরভ-মাইলসের। বছরে দু’বার দুই নাতি বেজিং যায়। ‘‘দাদু-দিদার সঙ্গে স্বচ্ছন্দে কথা বলার জন্য মিরভ-মাইলস এখন চিনা ভাষাও শিখছে। সেই অর্থে সেটাই তো ওদের মাতৃভাষা,’’ বলছেন মিলনবাবু।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement