নিঠারী হত্যাকাণ্ডে বেকসুর খালাস মণীন্দ্র পান্ধের। ফাইল চিত্র।
এলাহাবাদ হাই কোর্ট আগেই বেকসুর খালাস করেছিল। এ বার জেল থেকে মুক্তি পেলেন নিঠারি হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত মণীন্দ্র সিংহ পান্ধের। গ্রেটার নয়ডার লুকসর জেলে বন্দি ছিলেন মণীন্দ্র। জেল সুপার অরুণপ্রতাপ সিংহ বলেন, “পান্ধেরের মুক্তির বিষয়ে আজ আদালতের দ্বিতীয় নির্দেশপত্র পেয়েছি। তার পরই তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।”
বুধবার জেল কর্তৃপক্ষের কাছে পান্ধেরের মুক্তির নির্দেশপত্র আসে। তার পর দুপুর ২টোর সময় তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। পান্ধেরকে স্বাগত জানানোর জন্য জেলের বাইরে হাজির ছিল তাঁর পরিবার এবং পান্ধেরের আইনজীবী। কুর্তা-পাজামা এবং খাকিরঙা জ্যাকেট পরে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন পান্ধের। মুখে মাস্ক ছিল তাঁর। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে দ্রুত গাড়িতে উঠে বেরিয়ে যান পান্ধের এবং তাঁর পরিবার। যক্ষ্মায় ভুগছেন পান্ধের।
ধর্ষণ এবং খুনে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন পান্ধের এবং তাঁর সঙ্গী সুরেন্দ্র কোলি। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট দু’জনকেই বেকসুর খালাস করে দিয়েছে। পান্ধেরের বিরুদ্ধে ২টি মামলা ছিল এবং তাঁর সঙ্গী কোলির বিরুদ্ধে ছিল ১২টি মামলা। ২০০৫-’০৬ সাল নাগাদ নিঠারিতে একের পর যুবতী, কিশোর-কিশোরী নিখোঁজ হতে শুরু করে। তার তদন্তে নেমে ২০০৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর নিঠারির ব্যবসায়ী পান্ধেরের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১৯টি কঙ্কাল এবং কিছু দেহাবশেষ। এই ঘটনায় গোটা দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে তদন্তে উঠে আসে, শিশু, কিশোর-কিশোরীদের উপর যৌন অত্যাচার চালিয়ে খুন করে তাদের দেহের অংশ প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করে খেয়ে ফেলতেন পান্ধের এবং তাঁর বাড়ির পরিচারক সুরেন্দ্র।
পান্ধেরের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া কঙ্কারগুলির মধ্যে একটি ছিল বাঙালি তরুণী পিঙ্কি সরকারের কঙ্কাল। অভিযোগ ছিল, যৌন নির্যাতনের পরে খুন করা হয় তাঁকে। সেই মামলায় পান্ধের এবং কোলিকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিলেন সিবিআই আদালতের বিশেষ বিচারক পবন তিওয়ারি। নিঠারিকাণ্ডের ১৯টি মামলার মধ্যে যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে তিনটি মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছিল। বাকি ১৬টি মামলার মধ্যে সাতটিতে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয় কোলিকে। মণীন্দ্র অবশ্য মামলায় জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। পরে পিঙ্কি খুনের মামলায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এলাহাবাদ হাই কোর্ট তাঁকে বেকসুর খালাস করেছিল।