তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং তাঁর প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। — ফাইল ছবি।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাই এ বার ছুটলেন থানায়। অভিযোগ, মহুয়া জোর করে তাঁর বাড়িতে ঢুকছেন! আর কৃষ্ণনগরের সাংসদ এ কাজ করছেন স্রেফ তাঁকে ভয় দেখাতে। রাজধানী দিল্লির একটি থানায় এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেছেন দেহাদ্রাই। মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধবের অভিযোগ, গত ৫ এবং ৬ নভেম্বর তাঁকে না জানিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন মহুয়া। তবে এ ব্যাপারে এখনও মহুয়ার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
দিল্লির থানায় দায়ের করা অভিযোগপত্রে দেহাদ্রাই লিখেছেন, ‘‘গত ৫ নভেম্বর সকাল ১১টা নাগাদ এবং ৬ নভেম্বর সকাল ৯টা নাগাদ সাংসদ মহুয়া মৈত্র কাউকে না জানিয়েই আমার বাড়িতে আসেন। এ ভাবে (মহুয়া) মৈত্রের আমার বাড়িতে আসার কারণ হিসাবে মনে হচ্ছে, তিনি আমার বিরুদ্ধে আবার কোনও ভুয়ো প্রতারণামূলক অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’’ এর আগে এ ব্যাপারে তিনি দিল্লি পুলিশের কমিশনারকেও অবহিত করেছিলেন বলে অভিযোগপত্রে দাবি করেছেন মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব।
তিনি পুলিশের কাছে দরবার করেছেন, যাতে তাঁর অভিযোগের সাপেক্ষে মামলা রুজু করে তদন্তের কাজ শুরু হয়। তাঁর অভিযোগ, মহুয়া তাঁকে ভয় দেখানোর অভিপ্রায় নিয়েই তাঁর বাড়িতে ‘অনুপ্রবেশ’ করেছিলেন।
সম্প্রতি মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব দেহাদ্রাইয়ের নাম করে একটি বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। স্পিকার ওম বিড়লাকে লেখা চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করেন মহুয়া। তা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায়। দুবে জানান, দেহাদ্রাই তাঁকে যে চিঠি দিয়েছেন, তার উপর ভিত্তি করেই তিনি এই অভিযোগ করছেন। দুবের দাবি, মহুয়া যে প্রশ্ন করার বিনিময়ে ব্যবসায়ী হীরানন্দানির কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন, এ ব্যাপারে দেহাদ্রাইয়ের কাছে ‘অকাট্য প্রমাণ’ রয়েছে। যদিও গোটা বিষয়টিকেই মনগড়া বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মহুয়া। দুবে এবং দেহাদ্রাইকে আইনি নোটিসও পাঠান তিনি।
গত ২ নভেম্বর লোকসভার এথিক্স কমিটির মুখোমুখি হন সাংসদ মহুয়া। কিন্তু বৈঠকের মাঝপথেই ওয়াকআউট করেন তিনি। পিছন পিছন বেরিয়ে আসেন কমিটির আরও কয়েক জন সদস্য। যে সদস্যেরা প্রত্যেকেই বিজেপি এবং এনডিএ বিরোধী দলগুলির। তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার অভিযোগ ছিল, তাঁকে ‘ব্যক্তিগত এবং অপমানজনক’ প্রশ্ন করেছেন কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিজেপির সাংসদ বিনোদ সোনকর। রাতে কার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন, এমন সব একান্ত ব্যক্তিগত প্রশ্ন করা হচ্ছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার মহুয়ার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে ছুটলেন তাঁর প্রাক্তন বান্ধব দেহাদ্রাই।