গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বাড়ির সামনে আধাসেনা মোতায়েন করা নিয়ে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ‘নিরাপত্তা দিতে নয়, নজরদারি চালাতেই আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে’, অভিযোগপত্রে লিখলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ।
সম্প্রতি সংসদে দেওয়া ভাষণে একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রকে বেঁধেন মহুয়া। সেখানে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এবং তার বিচারের বিষয়টি টেনে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শুক্রবারই স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব এনেছেন বিজেপির দুই সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং পিপি চৌধুরি। সেই বিতর্ক পিছু ছাড়তে না ছাড়তেই নতুন করে শিরোনামে উঠে এলেন তিনি।
শনিবার দুপুর নাগাদ তাঁর বাড়ির সামনে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন নিয়ে প্রথম টুইটটি করেন মহুয়া। বাড়ির সামনের রাস্তায় কয়েকজন আধাসেনা দাঁড়িয়ে থাকার একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৩ সশস্ত্র কর্মী আমার বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে। তাঁরা জানিয়েছেন, বারাখাম্বা রোড থানার নির্দেশ মেনে তাঁরা নিরাপত্তা দিতে এসেছেন। এখনও বাড়ির বাইরেই আছেন। আমার নিরাপত্তার দরকার নেই। আমি দেশের স্বাধীন নাগরিক। আমাকে মানুষই রক্ষা করবেন’। শেষে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও অমিত শাহ-এর টুইটার হ্যান্ডেল ট্যাগ করে নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়ার আর্জিও জানান।
পরে থানায় করা এক লিখিত অভিযোগপত্রের ছবি পোস্ট করেন মহুয়া। বারখাম্বা খানা ও দিল্লি পুলিশের কমিশনারকে লেখা সেই অভিযোগপত্রে পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, ‘১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ বারখাম্বা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার আমার সঙ্গে দেখা করেন। রাত দশটা নাগাদ ৩ সশস্ত্র বিএসএফ কর্মীকে মোতায়েন করা হয় আমার বাড়ির সামনে’।
অভিযোগপত্রের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে মহুয়া মূল অভিযোগটি তুলে ধরেন। তাঁর মতে, ‘আমার বাড়িতে কারা আসছেন, যাচ্ছেন, তার উপর নজরদারি চালাচ্ছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। দেখে মনে হচ্ছে, আমি নজরদারিতে আছি। প্রশাসনকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ভারতের নাগরিক হিসাবে গোপনীয়তার অধিকার আমার মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে’।
প্রশাসনের কাছে এমন কোনও নিরাপত্তা তিনি চাননি, চিঠিতে সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। আগের টুইটের সুর ধরেই লিখেছেন, ‘দয়া করে এই নিরাপত্তা তুলে নিন। দেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে প্রশাসনের কাছে আমি কোনও নিরাপত্তা চাইনি’।
সাংবাদিকরা পরে এ নিয়ে মহুয়াকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেছেন, ‘‘এমনিতেই দেশের গণতন্ত্রিক পরিবেশ প্রশ্নের মুখে। তার মধ্যে এমন কিছু করা উচিত নয়, যা আমাদের মনে করতে বাধ্য করে যে আমরা কোনও নজরদারিতে রয়েছি।’’
এর পর সন্ধে নাগাদ বাড়ির বাইরে পাহাররত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানদের ছবি দিয়ে টুইট করেন, ‘আমাদের সাহসী জওয়ানরা সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে যোগদান করেন দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত করবেন বলে। কিন্তু আমার বাড়ির বাইরে তাঁদের দারওয়ানের কাজে লাগানো একটু বোকাবোকা, তাই না?’ এই টুইটেও তিনি দিল্লি পুলিশ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের টুইটার হ্যান্ডল জুড়ে দেন।