মহুয়া মৈত্র, প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। — ফাইল ছবি।
কারণ দর্শানোর নোটিস (শো-কজ়) পাঠানোর পরেও সরকারি বাংলো খালি করেননি বহিস্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এ বার তাঁকে পত্রপাঠ বাংলো খালি করতে বলল কেন্দ্রের ডাইরেক্টরেট অফ এস্টেটস (ডিওই)। মঙ্গলবার ডিওই-এর তরফ থেকে এ কথা মহুয়াকে জানানো হয়। নোটিসে লেখা হয়েছে, বাংলো খালি করতে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের রাস্তাতেও হাঁটা হতে পারে। স্বভাবতই, প্রাক্তন সাংসদকে পাঠানো নোটিসের ভাষায় প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে, তাহলে কি মহুয়াকে বাংলোছাড়া করতে জবরদস্তির পথেও হাঁটতে পারে মোদী সরকার?
৮ ডিসেম্বর মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ হয়। ৭ জানুয়ারির মধ্যে তাঁকে দিল্লিতে সরকারি বাংলো খালি করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু মহুয়া তা করেননি। গত ৮ জানুয়ারি, কেন এখনও বাংলো খালি করেননি, তিন দিনের মধ্যে তা জানাতে বলে মহুয়াকে নোটিস পাঠায় ডিওই। আদালতের দ্বারস্থ হন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। দিল্লি হাই কোর্ট জানায়, ডিওই-র কাছে মহুয়াকে আবেদন করতে হবে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার আবার নোটিস গেল মহুয়ার কাছে। সেখানে তাঁকে পত্রপাঠ বাংলো খালি করে দিতে বলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘‘মঙ্গলবার মহুয়ার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ নোটিস জারি করা হয়েছে। এ বার ডিইও আধিকারিকদের একটি দলকে ওখানে পাঠানো হবে, যাতে সরকারি বাংলোটি যত দ্রুত সম্ভব খালি করে দেওয়া যায়।’’ ডিরেক্টরেট অফ এস্টেটসের পাঠানো নবতম নোটিসে বলা হয়েছে, যদি মহুয়া নিজেই বাংলো না খালি করেন, তাহলে প্রয়োজন অনুযায়ী, বলপ্রয়োগের কথা ভাবা হতে পারে।
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, তিনি যে অনৈতিক ভাবে ওই বাড়ির বাসিন্দা নন, তা প্রমাণে মহুয়াকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সে কাজে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই পত্রপাঠ মহুয়াকে বাংলো খালি করার ‘চূড়ান্ত’পত্র জারি করা হল বলে মনে করা হচ্ছে।
মহুয়া চেয়েছিলেন, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর তিনি দিল্লির বাংলো খালি করবেন। এ নিয়ে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। মহুয়ার আইনজীবী জানিয়েছিলেন, যদি তাঁর মক্কেলকে সংশ্লিষ্ট সময়ের জন্য বাংলোয় থাকার অনুমতি দেওয়া হয়, তা হলে বর্ধিত সময়ের জন্য প্রযোজ্য যে কোনও খরচ দিতেও তিনি প্রস্তুত। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যম প্রসাদ জানিয়েছিলেন, সরকারি আবাসনে থাকার জন্য আবেদন ডিওই-র কাছেই করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারকে এ বিষয়ে আইন মেনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আদালত কিছু করবে না। এর পরে মহুয়ার আইনজীবী মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।
সেই ঘটনাতেই মঙ্গলবার পত্রপাঠ বাংলো খালি করে দেওয়ার নোটিস গেল প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদের কাছে। এই নোটিসের প্রেক্ষিতে মহুয়া কী পদক্ষেপ করেন সেটাই এখন দেখার।