গুয়াহাটিতে হোটেলের বাইরে নিরাপত্তা। ছবি: পিটিআই।
সরকারে টানপড়েনের মাঝেই অসুস্থ মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল। করোনা হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন তিনি। এদিকে দুপুরেই মন্ত্রিসভার বৈঠক রয়েছে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন উদ্ধব ঠাকরে। টুইটারে তেমনই ইঙ্গিত দিলেন শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত।
আবার হুঁশিয়ারি বিদ্রোহী একনাথ শিন্ডের। জানালেন, ৪০ নয়, শিবসেনা এবং নির্দল মিলিয়ে ৪৬ জন বিধায়ক রয়েছেন তাঁর সঙ্গে।
এককাট্টা একনাথ। বিদ্রোহ ঘোষণা করে গুজরাতের সুরাত হয়ে এখন তিনি অসমের গুয়াহাটিতে। তাঁর দাবি, সঙ্গে আছেন আরও ৪০ শিবসেনা বিধায়ক। কিন্তু শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতের দাবি, একনাথ তাঁদের সঙ্গেই আছেন। তাঁর কথায়, ‘‘একনাথ শিন্ডে এক জন শিব সৈনিক। সকালেই কথা হয়েছে ওঁর সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে জানিয়েছি।’’
সঙ্কটের আবহে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। অন্য দিকে, শিবসেনা সরকারে তাদের জোটসঙ্গী এনসিপি-ও সরকার বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছে। বৈঠকে বসছেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। অপর জোটসঙ্গী কংগ্রেস বলছে, তাদের বিধায়করা ঠিক আছেন। শিবসেনা নিজেদের বিধায়কদের সামলে নিক।
মহারাষ্ট্রের শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়করা ‘বন্দি’ অসমের হোটেল। গুয়াহাটির একটি বিলাসবহুল হোটেলে নিজেদের বন্দি রেখেছেন বিধায়করা। হোটেলের বাইরে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
বিদ্রোহী বিধায়করা তাঁদের সঙ্গেই আছেন। দাবি করলেন শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। জানালেন, মুম্বই ফিরছেন বিধায়করা। সব মিলিয়ে দুই শিবিরে চরম তৎপরতা।
মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তথা নির্দল বিধায়ক বাচ্চু কাদুর দাবি, ৩০ জন শিবসেনা বিধায়ককে মহারাষ্ট্র থেকে অসমে নিয়ে গিয়েছেন শিন্ডে। সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করছেন তাঁরা। সেই ছবিও নেটমাধ্যমে ভাইরাল।
বিজেপি-শাসিত অসমে পৌঁছেও বিজেপিতে যাচ্ছেন না বলে জানালেন শিন্ডে। তাঁর সঙ্গে বিদ্রোহী বিধায়কদের নিয়ে তিনি সাংবাদিক বৈঠকে কী বার্তা দেন সেটাই দেখার।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের বিধান পরিষদের নির্বাচনেই সেনা বিধায়কদের ‘বেপথ’ হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছিল। বিধায়কদের ক্ষমতা অনুযায়ী, বিজেপির যেখানে চারটি আসন জেতার কথা, সেখানে পাঁচটি আসনে জিতেছিল তারা। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত শিবসেনার অন্দরে এই বিদ্রোহের নেপথ্যে বিজেপির উস্কানি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। যদিও মহারাষ্ট্রের বিজেপি প্রধান চন্দ্রকান্ত পাটিল জানান, তাঁদের কাছে এমন কোনও খবর নেই।
বিজেপি এবং শিবসেনার পুরনো সম্পর্ক জোড়ার দাবিতে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন একনাথ। তাঁর দাবি, শিবসেনা বালাসাহেব ঠাকরের নীতি ভুলতে বসেছে। কিন্তু তিনি তা পারবেন না। তাঁর মতো আরও অনেক বিধায়ক চান, দল তার পুরনো ঐতিহ্য বয়ে চলুক। তাঁর এই কাজে মহারাষ্ট্রের আরও ৪০ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন একনাথ।
পশ্চিম মহারাষ্ট্রের প্রভাবশালী নেতা একনাথ শিন্ডে। ভোট-রাজনীতিতে পা দিয়েছিলেন ১৯৯৭ সালে। ২০০৪ সালে প্রথম মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে জেতেন তিনি। তার পর ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯-এর বিধানসভা ভোটেও জিতেছিলেন শিন্ডে। বিধানসভায় এক সময় বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
২০১৪ সালে বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকার যখন মহারাষ্ট্রে ক্ষমতায়, তখন রাজ্যের মন্ত্রীও হন শিন্ডে। পরে ২০১৯-এ মহা বিকাশ অঘাড়ি সরকারের নগরোন্নয়ন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী হন তিনি। বিধানসভার দলনেতার দায়িত্বও দেওয়া হয় তাঁকে।
বিদ্রোহী একনাথ শিন্ডের জন্য বিপাকে মহারাষ্ট্রের উদ্ধব সরকার। মাত্র এক সপ্তাহ আগেই শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের ছেলে তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী আদিত্যের অযোধ্যা সফরের সঙ্গী ছিলেন তিনি। তার পরই হঠাৎ বিদ্রোহ। জানালেন ৪০ বিধায়ক রয়েছে তাঁর সঙ্গে!