ভুয়ো তথ্য-সহ হুমকি ইমেল পাঠানোয় অভিযুক্তকে দফায় দফায় জেরা করছে পুলিশ। — প্রতীকী চিত্র।
বিমানে বোমা থাকার ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে সম্প্রতি নাগপুর থেকে জগদীশ উকিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুধু বিমানে নয়, বিভিন্ন হোটেল, এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দফতরেও একাধিক হুমকি ইমেল পাঠিয়েছিলেন তিনি। যদিও সবই ভুয়ো তথ্য ছিল। কী কারণে এতগুলি জায়গায় ভুয়ো তথ্য ছড়িয়েছিলেন তিনি, তা তদন্ত করে দেখছে নাগপুর পুলিশ। তাতে উঠে এসেছে বেশ কিছু নতুন তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রীর দফতর, রেল, বিমান, অন্য সরকারি দফতর মিলিয়ে ৩৫৪টি ভুয়ো তথ্যের ইমেল পাঠিয়েছিলেন জগদীশ।
মহারাষ্ট্রের মাওবাদী উপদ্রুত গোন্ডিয়া জেলার বাসিন্দা জগদীশ। বছর পঁয়ত্রিশের ওই ব্যক্তি সন্ত্রাসবাদের উপর একটি বইও লিখেছেন। বইয়ের নাম ‘আতঙ্কবাদ—এক তুফানি রাক্ষস’। নাগপুরের সহকারি পুলিশ কমিশনার (সাইবার অপরাধ) লোহিত মাতানি জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাস থেকে এই ভুয়ো ইমেল পাঠানো শুরু করেছিলেন জগদীশ। পুলিশের সন্দেহ, ওই বইটির প্রচারের জন্যই ভুয়ো ইমেল পাঠিয়েছিলেন তিনি।
সহকারি পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও অন্য সরকারি দফতরগুলিতে একশোর কাছাকাছি ইমেল পাঠিয়েছিলেন জগদীশ। সেগুলিতে সন্দেহজনক কিছুই ছিল না। নিজের লেখা বইটি প্রকাশের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ইমেলগুলি করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেগুলির কোনও জবাব না পাওয়ায় হুমকি ইমেল পাঠানো শুরু করেছিলেন লেখক। পুলিশ সূত্রে খবর, উকির লেখা বইয়ে নতুন কোনও তথ্য সেই অর্থে ছিল না। নাগপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় পাতিল জানিয়েছেন, ইন্টারনেট ঘাঁটলেই সন্ত্রাসবাদের উপর যে তত্ত্বগুলি পাওয়া যায়, সেগুলিকেই একত্রিত করে একটি বই লিখেছিলেন তিনি।
নাগপুরের পুলিশ কমিশনার রবীন্দ্র সিংগলও জানিয়েছেন, বোমাতঙ্ক ছড়ানোর ঘটনায় ধৃত উকি অনলাইন কী কী করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনলাইনে কোন কোন ওয়েবসাইট ঘেঁটেছেন, সে বিষয়টি তদন্তের আওতায় রয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে কল রেকর্ড, ল্যাপটপ। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোনও সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওই লেখকের দাবি, তাঁর কাছে সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত একটি গোপন তথ্য (টেরর কোড) রয়েছে। সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গে তাঁর ‘জ্ঞানের পরিধি’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও বৈঠকের জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন উকি।