ভোট দিয়ে বেরোচ্ছেন শাহরুখ খান। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই।
এ যেন দাদাগিরির লড়াই!
বিজেপি নাকি শিবসেনা— মুম্বই-সহ মহারাষ্ট্রে ক্ষমতার রাশ কার হাতে থাকবে, তার প্রাথমিক পরীক্ষা হয়ে গেল আজ। বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বা বিএমসি ছাড়াও ভোট ছিল নাগপুর, ঠাণে, পুণে, নাসিক-সহ রাজ্যের দশটি গুরুত্বপূর্ণ পুরসভায়। ১১টি জেলাপরিষদ ও ১১৮টি পঞ্চায়েত সমিতিতেও শক্তিপরীক্ষা হয়েছে। অনেকেই বলছেন, মহারাষ্ট্রে এটা যেন মিনি বিধানসভা নির্বাচন। তাই শিবসেনা নাকি বিজেপি— শেষ পর্যন্ত শাসক জোটের কোন শরিক সংখ্যার দৌড়ে এগিয়ে থাকে, তা নিয়ে জাতীয় স্তরেও কৌতূহল রয়েছে।
লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে ঝড়, তার পর মহারাষ্ট্রে দেবেন্দ্র ফডণবীস সরকারকেও মেনে নিতে হয়েছে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকে। মহারাষ্ট্রে কয়েক দশক ধরে বড় দাদার ভূমিকায় থাকার পরে জোটের ছোট শরিকে পরিণত হয়েছে শিবসেনা। কড়া বিবৃতির মধ্যে দিয়ে তাদের সেই ক্ষোভও সামনে এসেছে বারবার। শিবসেনার মুখপত্র সামনা-য় মোদীর বিভিন্ন নীতিকে যে ভাষায় সমালোচনা করা হয়েছে, ততটা ঝাঁঝ বিরোধী নেতাদের মুখেও শোনা যায়নি। পুরসভার ভোটেও জাতীয় ও রাজ্যস্তরের রাজনীতির বিষয় নিয়ে বলে গিয়েছে শিবসেনা। ভোটের ফল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হবে। তখনই বোঝা যাবে, উদ্ধব ঠাকরের ঝোড়ো প্রচারের কী পরিণতি হয়!
ভোট দিলেন হেমামালিনী। ছবি: সংগৃহীত।
বিএমসি দেশের সব থেকে ধনী পুরসভা। এর বাজেট বছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা, যা অনেক ছোট রাজ্যের বাজেটের থেকেও বেশি। বিএমসি-সহ রাজ্যের দশটি গুরুত্বপূর্ণ পুরসভার ভোটের ফলের প্রভাব মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের উপরেও পড়তে পারে। কারণ উদ্ধব হুমকি দিয়েছেন, এই ভোটের পরে তিনি নরেন্দ্র মোদী ও দেবেন্দ্র ফডণবীস— দুই সরকারের থেকেই সমর্থন তুলে নেবেন। আর ফডণবীস ঘোষণা করেছেন, ‘‘পুরভোটে জিতলে কৃতিত্ব দলের। হারলে দায়িত্ব আমার।’’ দুই শিবিরই ঝড়ের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে। বিএমসির ভোটার তালিকায় আজ অনেকেই নিজের নাম খুঁজে পাননি। তা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুই যুবাকে ঘিরেই উচ্ছ্বাস
বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন শিবসেনার দখলে ছিল। সমর্থন ছিল বিজেপির। কিন্তু এ বার বিজেপির সঙ্গে তাদের জোট হয়নি। এই পুরসভাকে উদ্ধব ঠাকরে ধরে রাখতে পারেন কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। অনেকেই ধারণা, বিএমসি শিবসেনার হাত থেকে গেলে উদ্ধবকে মাথা তুলতে দেবে না বিজেপি। অন্য শিবিরের মতে, বিবৃতির লড়াই যতই থাক, ভোটের পরে ক্ষমতায় টিঁকে থাকতে বিজেপি-শিবসেনার নেতারা যে হাত মেলাবেন না সে কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। বিধানসভা ভোটের পরে তেমনটাই হয়েছিল।