মহারাষ্ট্রে সাংবাদিক খুন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মহারাষ্ট্রের রত্নগিরির বিতর্কিত পেট্রো রসায়ন প্রকল্পের পর্দাফাঁস করায় এক সাংবাদিককে গাড়িচাপা দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল এক জমি মাফিয়ার বিরুদ্ধে। নিহত সাংবাদিকের নাম শশীকান্ত ওয়ারিশে (৪৮)। তাঁকে খুনের অভিযোগ উঠেছে পান্ধারিনাথ অম্বেরকর নামে এক জমি মাফিয়ার বিরুদ্ধে।
রত্নগিরির পেট্রো রসায়নের অন্দরের খবর এবং এই প্রকল্প ঘিরে যে একটা দুষ্টচক্র গড়ে উঠেছে তা নিয়ে সোমবার সংবাদপত্রে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন শশীকান্ত। সেখানে পান্ধারিনাথ সম্পর্কে বেশ কিছু গোপন তথ্য তুলে ধরেছিলেন ওই সাংবাদিক। পান্ধারিকে ‘দুষ্কৃতী’ বলেও তাঁর লেখায় উল্লেখ করেছিলেন শশীকান্ত। সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই খুন হতে হল সাংবাদিক শশীকান্তকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রত্নগিরির একটি পেট্রল পাম্পে দাঁড়িয়ে ছিলেন শশীকান্ত। অভিযোগ, সেই সময় পান্ধারিনাথের একটি গাড়ি এসে শশীকান্তকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে কোলাপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর পান্ধারিনাথকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে নিজেদের হেফাজতে রাখবে পুলিশ।
জমি মাফিয়ার হাতে শশীকান্তের খুন হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে মরাঠি সাংবাদিক সংগঠন। শশীকান্তের মৃত্যুতে তদন্তের দাবি তুলেছে সংবাদমাধ্যমগুলি। অখিল ভারতীয় মরাঠি পত্রকার পরিষদের সদস্যরা রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের সঙ্গে দেখা করে দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম সংগঠনগুলির অভিযোগ, কোটি কোটি টাকার পেট্রো রসায়ন প্রকল্পের জন্য স্থানীয়দের কাছে থেকে জোর করে জমি দখল-সহ একাধিক দুর্নীতির পর্দাফাঁস করছিলেন শশীকান্ত। পর পর কয়েকটি লেখায় এই প্রকল্পের দুর্নীতি এবং তার সঙ্গে কারা কারা জড়িত তা প্রকাশ্যে আনছিলেন তিনি। আর সে কারণেই শশীকান্তকে খুন করা হয়েছে।
প্রথমে রত্নগিরি জেলার কোঙ্কনে নানার গ্রামে এই প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে শিবসেনার চাপে সেই প্রকল্প বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু গত বছর কেন্দ্র প্রকল্পটি অন্যত্র চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।