একনাথ শিন্ডে বিধায়কদের চনমনে রাখতে দিচ্ছেন ‘ভোকাল টনিক’ ফাইল ছবি।
গুয়াহাটিতে হোটেলবাসের মেয়াদ বাড়ছে মহারাষ্ট্রের বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়কদের। প্রথমে বিলাসবহুল হোটেলটি ৩০ জুন পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তা বেড়ে ৫ জুলাই করা হয়েছে। শিবসেনার উদ্ধব শিবিরের অন্যতম নেতা সঞ্জয় রাউত শিন্ডে শিবিরকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ১১ জুলাই পর্যন্ত তাঁরা যেন গুয়াহাটিতেই থেকে যান। যদিও সঞ্জয়ের এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও কারণ পাচ্ছেন না বিলাসবহুল হোটেলের আবাসিক বিধায়করা। তাঁরা ব্যস্ত হোটেলেই।
সুপ্রিম কোর্টের সোমবারের নির্দেশে যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়েছে। ঘটনাপ্রবাহের টানাপড়েনে ব্যতিব্যস্ত গুয়াহাটির বিলাসবহুল হোটেলে আচমকাই নেমে এসেছে অকাল দীপাবলি। সেমাইয়ের পায়েস দিয়ে হাসিমুখে মিষ্টিমুখ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আতশবাজি পোড়েনি। কারণ, আনন্দের বাহ্যিক প্রকাশ আপাতত বারণ। সূত্রের খবর, হোটেলেই আতশবাজি মজুত করে রাখা হয়েছে। অপেক্ষা চূড়ান্ত বিজয়ের।
সূত্রের খবর, চার্টার্ড বিমান থেকে গুয়াহাটিতে নামার পরই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বিধায়কদের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। তা থেকে পুরনো সিম খুলে নতুন সিম ঢুকিয়ে আবার ফোন ফেরত যায় বিধায়কদের কাছে। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্য ব্যতিক্রম শিন্ডের মতো কয়েক জন। জানা যাচ্ছে, বিদ্রোহী বিধায়কদের হোটেল থেকে বেরোনো বারণ। কিন্তু ঘেরাটোপে থাকতে থাকতে যদি বিধায়করা বিগড়ে যান! এই সম্ভাবনা নাকচ করতে শিন্ডের ঘরের দরজা ২৪ ঘণ্টা খোলা। স্বভাবগত ভাবে দিলখোলা মানুষ একনাথ প্রত্যেক বিধায়ক এবং তাদের সঙ্গীদের চনমনে রাখতে দিয়ে চলেছেন ‘ভোকাল টনিক’। অসমর্থিত সূত্রের দাবি, হোটেলে শিন্ডের সুইট যেন আড্ডার রাজধানী। সেখানে নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে যেমন আলোচনা চলছে, তেমনই থেকে থেকে উঠছে হাসির ছররাও। হোটেলের একাধিক সুইমিং পুলেও ভিড় করছেন বিধায়করা। বাগানেও ঘুরতে দেখা যাচ্ছে অনেক বিধায়ক ও সঙ্গীদের। বিকল্প মোবাইল নম্বর থেকে নিকটজনেদের সঙ্গেও ভিডিয়ো কলে ব্যস্ত থাকছেন বিদ্রোহীরা। তবে দিনের বেশির ভাগ সময় জুড়ে থাকছে বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেল। কোন চ্যানেলে কী দেখানো হচ্ছে, রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনায় তা গিলছেন হোটেলের আবাসিক বিধায়করা। তা নিয়ে চলছে গরম গরম আলোচনা।
সূত্রের আরও দাবি, সোমবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরই ‘মুড’ বদলে গিয়েছে গুয়াহাটির হোটেলের। মুষড়ে পড়া ভাব থেকে রাতারাতি ‘জোশ’ এখন চাঙ্গা।
এনসিপি ও কংগ্রেসের মহারাষ্ট্রের নেতারা দাবি করছেন, শিবসেনার এই বিদ্রোহী বিধায়কদের অভিযানের নেপথ্যে যে বিজেপি, রয়েছে তা কার্যত পরিষ্কার। তাই শিন্ডেরা যতই নিজেদের স্বতন্ত্র ভাবমূর্তি ধরে রাখতে প্রাণপাত করুন না কেন, বিজেপির নেপথ্য পদচারণা ক্রমশ আরও স্পষ্ট হচ্ছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।