গুয়াহাটির হোটেলে হাজির ৪২ জন বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়ক। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের ইস্তফার আশ্বাসে তাঁর ভরসা নেই বলে জানিয়ে দিলেন শিবসেনার বিদ্রোহী শিবিরের নেতা একনাথ শিন্ডে। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটির হোটেল থেকে তিনি জানিয়েছেন, আগে কংগ্রেস-এনসিপির সঙ্গে ত্যাগ করার ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে হবে উদ্ধবকে। তার পরেই সমঝোতার প্রশ্ন।
ঘটনাচক্রে, মাতোশ্রীতে উদ্ধব অনুগামী বিধায়ক ও শিবসেনা নেতাদের বৈঠকের কিছুক্ষণ আগে বিজেপির ‘হেফাজতে’ থাকা শিন্ডের ওই বিবৃতি প্রকাশ্যে এসেছে। ওই বৈঠকের আগে উদ্ধব-ঘনিষ্ঠ শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউথ বলেন, ‘‘বিদ্রোহীরা চাইলে ‘মহা বিকাশ আঘাড়ী’ (শিবসেনার পাশাপাশি এনসিপি এবং কংগ্রেস যে জোটের শরিক) জোট ছাড়ার বিষয়ে খোলা মনে আলোচনা হতে পারে।’’ প্রসঙ্গত, উদ্ধব বুধবার বলেছিলেন, ‘‘বিধায়কেরা চাইলে আমি মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে সরে যাব।’’
উদ্ধব এবং শিন্ডে।
বিদ্রোহী শিবিরের তরফে বৃহস্পতিবার গুয়াহাটির হোটেলে বিজেপির ‘হেফাজতে’ থাকা ৪২ জন বিধায়কের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। অন্য দিকে, উদ্ধবের বৈঠকে মাত্র ১৪ জন শিবসেনা বিধায়ক হাজির ছিলেন বলে একটি সূত্রের দাবি। দলত্যাগ বিরোধী আইন এড়াতে শিবসেনা বিধায়কদের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৩৭ জনের সমর্থন পেতে হবে শিন্ডে শিবিরকে। অর্থাৎ, সেই ‘লক্ষ্যপূরণ’ হয়ে গিয়েছে।
সরকার-সমর্থক ৮ জন নির্দল বিধায়কও তাঁদের পাশে রয়েছেন বলে শিন্ডে শিবিরের দাবি। এরই মধ্যে এক ডজনেরও বেশি শিবসেনা সাংসদ শিন্ডে-গোষ্ঠীতে যোগ দিতে পারেন বলে বিজেপির একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিধায়ক সংখ্যা।
প্রসঙ্গত, ২৮৮ সদস্যের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় গরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১৪৫ জন বিধায়কের সমর্থন। বর্তমানে একটি পদ খালি থাকায় জাদু-সংখ্যা ১৪৪-এ নেমে এসেছে। পরিষদীয় পাটিগণিতের হিসেব বলছে, শিন্ডে-সহ ৪২ বিধায়ক শিবির বদলালে উদ্ধবের পক্ষে গদিরক্ষা অসম্ভব। অঙ্কের হিসেবে শিবসেনার ৫৬, এনসিপির ৫৩ এবং কংগ্রেসের ৪৪ বিধায়কের পাশাপাশি বহুজন বিকাশ অঘাড়ির ৪, সমাজবাদী পার্টি এবং প্রহার জনশক্তি পক্ষের দু’জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে উদ্ধব শিবিরে। এ ছাড়া কৃষক সংগঠন পিডব্লিউপিআই-এর ১ এবং ৮ নির্দল রয়েছেন ট্রেজারি বেঞ্চের দিকে। যদিও ওই ৮ নির্দল এখন তাঁদের পাশে বলে শিন্ডে শিবিরের দাবি।
বিজেপির ১০৬ জনের পাশাপাশি মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা, রাষ্ট্রীয় সমাজ পক্ষ এবং জনসুরাজ সাক্ষী পক্ষের ১ জন করে এবং ৫ নির্দল বিধায়ক রয়েছেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী শিবিরে। আসাদউদ্দিন ওয়েইসির ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর ২ এবং সিপিএম ও স্বাভিমানী পক্ষের ১ জন করে বিধায়ক ‘নিরপেক্ষ’ অবস্থান পালন করেন বিধানসভায়। তবে ওই ‘নিরপেক্ষ’ বিধায়কদের সমর্থন পেলেও মুখ্যমন্ত্রিত্ব টেকাতে পারবেন না উদ্ধব।