শরদ পওয়ার ও সনিয়া গাঁধী। —ফাইল চিত্র
সরকার গঠনে অনিশ্চিয়তা তৈরি হতেই এ বার সামনে চলে এল এনসিপি-কংগ্রেস শরিকি বিবাদ। প্রায় দু’দিন অপেক্ষার পরেই সমর্থনের চিঠিতে দেরির জন্য কংগ্রেসকে দুষল এনসিপি। শরদ পওয়ারও কংগ্রেস নেতৃত্বের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর। তাঁর ভাইপো এনসিপি নেতা অজিত পওয়ার বলেছেন, ‘‘সোমবার সকাল ৮টা থেকে সন্ধে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে এনসিপি।’’ শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলে, তার দায়ও যে কংগ্রেসের ঘাড়েই ঠেলবে শরিক এনসিপি, তারও ইঙ্গিত দিয়ে রাখল এনসিপি।
ফল ঘোষণার পর থেকে প্রায় ২০ দিন ধরে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানির পর সোমবার ছবিটা পাল্টায়। একটা সময় এমনও মনে হচ্ছিল, শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস মিলে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন হচ্ছে। কংগ্রেস নীতিগত ভাবে সমর্থনের কথাও জানায়। কিন্তু সন্ধে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সেই চিঠি না আসায় কোনও সমর্থনপত্র ছাড়াই রাজভবনে যান শিবসেনার বিধায়ক উদ্ধব-পুত্র আদিত্য ঠাকরে। রাজ্যপালকে সময় বাড়ানোর জন্য আর্জি জানান। কিন্তু রাজ্যপাল সেই আবেদন মঞ্জুর করেননি। তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে এনসিপি-কে সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন রাজ্যপাল।
এই সমর্থনের চিঠিতে ‘অনভিপ্রেত’ দেরি নিয়েই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব এনসিপি। এ নিয়ে শরদ পওয়ারও কংগ্রেসের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে সেই ক্ষোভ-উষ্মা প্রকাশ করেছেন বলেও খবর। কংগ্রেস সোমবারই জানিয়েছিল, মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে দলের নেতৃত্ব শরদ পওয়ারের সঙ্গে কথা বলবেন। সেই মতো এ দিন সকালে শরদ পওয়ারকে দিল্লিতে ডাকেন সনিয়া গাঁধী। কিন্তু শরদ এতটাই ক্ষুব্ধ যে দিল্লি যেতে চাননি। দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে সনিয়াকে এড়িয়ে গিয়েছেন। বাধ্য হয়ে তখন কংগ্রেসই দলের তিন নেতাকে মহারাষ্ট্রে পাঠিয়ে পওয়ারের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেয়।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ মোদী মন্ত্রিসভার, রাষ্ট্রপতিকে রিপোর্ট রাজ্যপালের
অজিত পওয়ার ক্ষোভ গোপন রাখেননি। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের (কংগ্রেস) চিঠির জন্য আমরা সন্ধে পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। কিন্তু সন্ধে পর্যন্ত আমরা তা পাইনি।’’ কিন্তু এনসিপি তো তাদের দলের সমর্থনপত্র শিবসেনাকে দিতে পারত— সাংবাদিকরা এই প্রশ্ন তুলতেই অজিতের জবাব, সকাল ১০টা থেকে সন্ধে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত শরদ পওয়ার সহ আমাদের দলের নেতারা অপেক্ষা করেছেন। শিবসেনাকে সাড়ে ৭টার মধ্যে সমর্থনপত্র জমা দিতে হত। কংগ্রেস চিঠি না পাঠালে আমরা কী করে দেব?’’ কেন? অজিতের ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা একসঙ্গে ভোটে লড়েছি। সেই কারণেই যৌথ সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। কংগ্রেস একা শিবসেনার বিরুদ্ধে লড়েনি, দুই দল একসঙ্গে লড়াই করেছে।’’
আরও পড়ুন: সরকার গড়তে মাত্র এক দিন সময়! রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল ক্ষুব্ধ শিবসেনা
এখন এনসিপির হাতে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সময়। সেই সময়ের মধ্যে কংগ্রেস সমর্থনপত্র না দিলে রাষ্ট্রপতি শাসন অনিবার্য হয়ে উঠবে। সেই আশঙ্কাতেই শরিক কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এ বার আক্রমণ শুরু করল এনসিপি।