মোদীর ‘ভাই’ উদ্ধবের আজ অঙ্ক পরীক্ষা

গরিষ্ঠতার জন্য দরকার ১৪৫ জনের সমর্থন।  শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস মিলিয়ে ১৬৬ জনের সমর্থনের চিঠি দেওয়া রয়েছে রাজ্যপালের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

মুম্বই শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০২
Share:

সূচনা: মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে সচিবালয়ে উদ্ধব ঠাকরে। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

শপথ নিয়েছেন গত কাল সন্ধেয়। আজ দুপুর দু’টোর পরে ছেলে আদিত্যকে সঙ্গে নিয়ে মন্ত্রালয়ে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিলেন উদ্ধব ঠাকরে। করলেন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক। সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামিকাল বিধানসভায় সরকারের গরিষ্ঠতার প্রমাণ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। শিবির সামলাতে এ দিনই মুম্বইয়ে আসতে পারেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

Advertisement

গরিষ্ঠতার জন্য দরকার ১৪৫ জনের সমর্থন। শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস মিলিয়ে ১৬৬ জনের সমর্থনের চিঠি দেওয়া রয়েছে রাজ্যপালের কাছে। পরে ক্ষমতাসীন জোট ‘এমভিএ’-এ জানিয়েছে, সমর্থনকারীর সংখ্যা বেড়ে ১৭০ হয়েছে। কাল বেলা একটায় তার সত্যাসত্য যাচাই হবে বিধানসভায়।

সরকার চালানোর আসল পরীক্ষা এর পরে। উদ্ধবের দল জানে, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে মিথ্যাবাদী বলেছে তারা। বিজেপির সঙ্গে নির্বাচনী গাঁটছড়া ছিঁড়ে সরকারে এসেছে। তার পরেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্ধব ঠাকরের ‘বড় ভাই’ হিসেবেই দেখতে চায় শিবসেনা। চায় কেন্দ্রের সহযোগিতা। দলীয় মুখপত্রে শিবসেনার তাই বক্তব্য, কৃষকদের জন্য সুরাহা আসতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে। মহারাষ্ট্রে শিবসেনা ও বিজেপির মধ্যে সমস্যা হলেও উদ্ধব ঠাকরে ও নরেন্দ্র মোদী পরস্পরের ভাইয়ের মতো। ফলে মহরাষ্ট্রে ছোট ভাইয়ের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে মোদীজির। প্রধানমন্ত্রী বিশেষ একটি দলের নয়। তিনি গোটা দেশের।’’ প্রধানমন্ত্রী যে উদ্ধবকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন তা-ও উল্লেখ করেছে শিবসেনা। তবে মুখপত্রে তারা এ-ও লিখেছে, ‘‘দিল্লিকে আমরা আমাদের ক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছি। দেশের অর্থনীতি মুম্বইয়ের উপরে নির্ভরশীল। মুম্বইয়েই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হয়। সীমান্তেও এই রাজ্যের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মহারাষ্ট্রকে তাই উপযুক্ত মর্যাদা দেওয়া উচিত।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মানুষ জানেন, এখানে আয়ু পঞ্চাশেই ফুরিয়ে যায়

এ দিকে ‘মর্যাদার জন্য’ এনসিপির অন্দরে লড়ে যাচ্ছেন অজিত পওয়ার। গত কালই উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্ত এএমভিএ জোটের ‘পিতামহ ভীষ্ম’: শরদ পওয়ার তা হতে দেননি। দলীয় সূত্রে এমন ইঙ্গিতও মিলছে যে, অজিতকে আটকাতে, উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ না-ও নিতে পারে এনসিপি।

সহ্যাদ্রী গেস্ট হাউসে আজ উদ্ধব মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে রায়গড় কেল্লার সংরক্ষণে ২০ কোটি টাকা মঞ্জুর হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, বর্তমান প্রকল্পগুলি খতিয়ে দেখে কৃষকদের জন্য উপযুক্ত সহায়তার ঘোষণা করবেন মুখ্য মন্ত্রী উদ্ধব।

দেবেন্দ্র জমানাতেই ‘আরে’ মেট্রো কার শেড তৈরির জন্য বৃহন্মুম্বই পুরসভা ২৬০০ গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছিল। রাতারাতি ২০০০ গাছ সাফ হয়ে যাওয়ার পরে স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম দিনেই উদ্ধব ঘোষণা করেছেন, ‘‘ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছি। রাতের অন্ধকারে সবুজ-ধ্বংস করা বরদাস্ত করব না। সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্তের আগে একটি পাতাও ছেঁড়া যাবে না।’’ উদ্ধব-পুত্র আদিত্যের মন্তব্য, ‘‘মানুষ এই সিদ্ধান্তে খুশি। উন্নয়নের কাজ চলবে। তবে পরিবেশের যে ক্ষতি করা হচ্ছিল তা বন্ধ করা হবে।’’

শিবসেনা মোদীর সহযোগিতা চাইলেও, অনিশ্চয়তার মেঘ তাঁর সাধের বুলেট ট্রেন প্রকল্পে। শিবসেনার মুখপাত্র মণীশা কায়নাডে বলেছেন, ‘‘ওই প্রকল্পের বেশির ভাগ টাকা দিচ্ছে মহারাষ্ট্র। কিন্তু লাইনের বেশির ভাগটাই হবে অন্য রাজ্যে। এটা অবশ্যই নতুন করে ঠিক করতে হবে।’’ এতে প্রকল্পের কাজে দেরি ও খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement