Madhya Pradesh

কমলের খেল্‌! আস্থা ভোট নিয়ে ধন্দে বিজেপিও

২০ ভাগ পথ পেরোনো এখনও বাকি। সব নির্ভর করছে ইস্তফা দেওয়া বিধায়কদের উপর, আর কমল নাথ কী করেন!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০২:৫৬
Share:

কমল নাথ। ছবি: পিটিআই।

অঙ্ক বলছে, সংখ্যা নেই তাঁর সঙ্গে। তবুও চওড়া হাসিতে দিব্য বলে চলেছেন কমল নাথ, ‘‘চিন্তা নেই, দশ বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকছিই।’’

Advertisement

কমল নাথের এই আত্মবিশ্বাসই আশা জাগাচ্ছে কংগ্রেসকে। নেতারা বলছেন, ‘‘কী ভেলকি দেখাবেন কমল নাথ, তিনিই জানেন। ম্যাডামও (সনিয়া গাঁধী) তাই ফোন করে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁকে, সরকার বাঁচাতে যা করার করুন।’’

মধ্যপ্রদেশের শাসক শিবিরের ২২ বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তবু ব্যক্তিটি যে হেতু কমল নাথ, নিজেদের উপর বিজেপিরও ষোলো আনা ভরসা নেই। বিজেপির অনেকেই বলছেন, ‘‘বলতে পারেন মধ্যপ্রদেশে সরকার ফেলার সম্ভাবনা ৮০ ভাগ। ২০ ভাগ পথ পেরোনো এখনও বাকি। সব নির্ভর করছে ইস্তফা দেওয়া বিধায়কদের উপর, আর কমল নাথ কী করেন!’’

Advertisement

কমল নাথ-দিগ্বিজয় সিংহরা গোড়ার দিন থেকে বলছেন, এ ভাবে ইস্তফা দিলে তা গ্রহণ হয় নাকি? সশরীর এসে বিধানসভার স্পিকারের হাতে তুলে দিতে হবে। রাজ্যপাল লালজি টন্ডনের কাছে আজ কমল নাথ তিন পাতার চিঠি দিয়েছেন। অভিযোগ করেছেন, ঘোড়া কেনাবেচা হচ্ছে। চার্টার্ড বিমানে বিধায়কদের নিয়ে গিয়ে জোর করে আটকে রেখেছে বিজেপি। পরিবারের লোকদের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ভাবে আটক থেকে কি ভাবে সদিচ্ছায় ইস্তফা দিতে পারেন?

ইস্তফা দেওয়া কংগ্রেসের ৬ মন্ত্রীকে আগেই বরখাস্তের সুপারিশ করেছিলেন কমল নাথ। আজ রাজ্যপালকে চাপ দেওয়ার পর সে প্রস্তাব গ্রহণও করে নেন টন্ডন। কিন্তু কমল নাথ এখন অন্য খেলায় নেমেছেন। স্পিকার আজ ইস্তফা দেওয়া ৬ বিধায়ককে ডেকেছিলেন, আগামিকাল ডেকেছেন ৭ জনকে, বাকি ৯ জনকে রবিবার। বেঙ্গালুরু থেকে বিশেষ বিমানে বিধায়কদের নিয়েও আসে বিজেপি। কাকতালীয় হলেও সে বিমানের পাইলটের নাম ছিল ‘দিগ্বিজয় সিংহ’। কিন্তু ভোপালে নামতেই বিপত্তি!

বিমানবন্দরের সব পথে মোতায়েন কংগ্রেস কর্মীরা। এতটাই যে সন্ধেয় দিল্লির জন্য ভোপাল বিমানবন্দর যাওয়ার পথে কালো পতাকা নিয়ে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার গাড়িতেই হুড়মুড়িয়ে চড়ে বসেন তাঁরা। কোনও মতে ছাড়া পান। বিধায়কেরা দাবি জানিয়েছেন, মধ্যপ্রদেশ পুলিশে আস্থা নেই। স্পিকারের কাছে যেতে চাই কেন্দ্রীয় বাহিনী। অগত্যা ফিরেই যেতে হয়েছে বিধায়কদের। এ দিকে বিধানসভায় নিয়ম মেনে ‘অপেক্ষা’য় বসে থাকলেন স্পিকার। কংগ্রেসের এক নেতা বললেন, ‘‘রাশ স্পিকারের হাতেই। স্পিকার যত ক্ষণ ইস্তফা নিয়ে সন্তুষ্ট না হচ্ছেন, তা গৃহীত হবে না। আর সেটা না হলে আস্থা ভোটই বা কী করে হবে?’’

প্রতিবেশী রাজ্য কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে করোনা-আতঙ্কে বিধানসভা মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে ২৬ মার্চ পর্যন্ত। মধ্যপ্রদেশও সে পথে হাঁটবে, কংগ্রেস থেকে জানানো হল সকাল থেকে। প্রশ্ন করা হল কমল নাথকেও। স্পষ্ট জবাব এড়িয়ে বললেন, ‘‘ভাইরাস তো রাজ্য-রাজনীতিতে। আস্থা ভোট তো হবে, রাজ্যপালের বক্তৃতায়, বাজেটে। কিন্তু তখনই হবে, যখন ইস্তফা দেওয়া বিধায়কেরা আসবেন।’’ কংগ্রেস জানাচ্ছে, কমল নাথই জানেন, কী ভাবে সময় বাড়ানো যায়! তিনিই জানেন, ইস্তফা দেওয়া বিধায়কদের মন বদলাতে। তিনিই জানেন, বিজেপিকেও কী করে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে ভাঙিয়ে আনা যায়!

রাজ্যের আর্থিক অপরাধ শাখা আজই সিন্ধিয়ার বিরুদ্ধে জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগে ফের তদন্ত শুরু করেছে। ১০ হাজার কোটি টাকার জমি কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযোগ, একই জমি বার বার বেচা হয়েছে। সরকারি জমিও বেচে দেওয়া হয়েছে। ঘুঁটি সাজাচ্ছেন কমল। ‘অপারেশন কমল’ ভেস্তে দিতে। গত কাল দলে স্বাগত জানিয়ে সিন্ধিয়াকে ‘বিভীষণ’ বলেছিলেন শিবরাজ সিংহ চৌহান। মুচকি হেসে কমল বলেন, ‘‘শিবরাজ ঠিক বলেছেন। সিন্ধিয়া কেন দল ছাড়লেন, তিনিই জানেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement