পাবজি খেলতে নিষেধ করায় লখনউয়ে মাকে খুন কিশোরের। ফাইল চিত্র।
পাবজি খেলতে না দেওয়ায় লখনউয়ে মা-কে ছেলের খুনের ঘটনায় নয়া মোড়। শুধু ওই কিশোরই নয়, পুলিশের দাবি খুনের পিছনে ছিলেন আরও দু’জন। ঘটনাচক্রে, সেই দু’জনই পরিবারের সদস্য বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।
পাবজি খেলতে নিষেধ করায় গত ৭ জুন মাকে গুলি করে খুন করে বছর ষোলোর কিশোর। কিন্তু তদন্তকারীদের দাবি, পাবজির জন্য খুন উপলক্ষ মাত্র। পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে সাধনা সিংহ নামে ওই মহিলাকে। পুলিশ যাতে ষড়যন্ত্রকারীর হদিস না পায়, তাই ছেলেকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কিশোরকে সামনে রেখে আড়ালে কেউ পরিচালনা করেছে তাঁকে। তদন্তকারীদের কাছে এমনই দাবি করেছেন কিশোরের এক আত্মীয়।
কিন্তু বাকি দু’জন কারা? কেনই বা এই খুন? এই উত্তরগুলিই এখন খুঁজছে পুলিশ। ওই আত্মীয় এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, ছেলের মনের মধ্যে মায়ের প্রতি একটা বিদ্বেষ তৈরি করা হয়েছিল। এবং পুরোটাই পরিকল্পনামাফিক। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মাকে খুনের পর কিশোর স্কুটি নিয়ে কারও সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। কিন্তু কার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল সে, সেটাই এখন সবচেয়ে রহস্যজনক বিষয়। তবে তদন্তকারীদের ধারণা, ওই ব্যক্তি আর কেউ নন, পরিবারেরই এক সদস্য।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, পরিবারের মধ্যে ছোট ছোট অশান্তি লেগে থাকত। কিন্তু সেটা খুব একটা আমল দিতেন না সাধনা। আর সেটাই তাঁর খুনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ছক কষে সাধনার ছেলেকে তাঁর বিরুদ্ধে আড়ালে থেকে উস্কানি দিচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। যাঁর অঙ্গুলিহেলনে কিশোর এই খুন করেছে, তাঁর সঙ্গে কিশোরের খুব ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। ওই ব্যক্তি কিশোরের চালচলন, স্বভাব, পছন্দ-অপছন্দ সব কিছুই জানতেন। শুধু তাই-ই নয়, বাবার প্রতি টান থাকলেও, মায়ের প্রতি যে খুব একটা টান ছিল না, সেটাও জানতেন ওই ব্যক্তি। ফলে এমন ভাবে ঘুঁটি সাজিয়েছিলেন, যাতে সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙে। অর্থাৎ ছেলের হাত দিয়েই মাকে খুন করানো হবে, আর যে উদ্দেশে খুন করানো তা-ও সফল হবে।
কিশোরের ওই আত্মীয় দাবি করেছেন, কী ভাবে পুলিশ এবং আইনের হাত থেকে বাঁচা যায়, হত্যার ষড়যন্ত্রকারী সমস্ত রকম রাস্তাই পরিষ্কার রেখেছিলেন। তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, খুনের ঘটনার দিন ওই কিশোর এবং তার বোন ছাড়াও আরও এক জন ঘরে ছিলেন। আর এক জন দূর থেকে গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছিলেন। ঘরে থাকা ওই তৃতীয় ব্যক্তি কে, আর কে-ই বা দূর থেকে কিশোরকে এই ঘটনা ঘটানোর জন্য পরিচালনা করছিলেন— এই দুই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
(গুরুতর অপরাধে অভিযুক্তকে ‘আপনি’ সম্বোধনে আপত্তি প্রকাশ করেন কেউ কেউ। কিন্তু আইনের বিচারে দোষী সাব্যস্ত হননি, এমন অভিযুক্তকে ‘আপনি’ সম্বোধনেরই পক্ষপাতী আনন্দবাজার অনলাইন)