ছবি টুইটার।
এ যেন এক কিশোরীর অসাধ্যসাধন করার কাহিনি! লখনউয়ের প্রমিতা তিওয়ারির শরীরে থাবা বসিয়েছিল ক্যানসার। কিন্তু মারণরোগকে রুখেই আইএসসি পরীক্ষায় ৯৭.৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে তাক লাগাল ১৭ বছরের কিশোরী। গত অগস্ট মাসেই অ্যাকিউট মাইনর লিউকোমিয়া ধরা পড়ে প্রমিতার। তার পরিজনদের অনেকেই ভেবেছিলেন যে, তার ভবিষ্যৎ অন্ধকারে। কিন্তু হাল ছাড়েনি ওই পড়ুয়া। বরং দাঁতে দাঁত চেপে প্রতিনিয়ত লড়ে গিয়েছে।
পরিবার সূত্রে খবর, ক্যানসার ধরা পড়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পড়েছিল প্রমিতা। সে সময় তার বাবা উৎকর্ষ তিওয়ারি ও মা রশ্মি তাকে সাহস জুগিয়েছিলেন। ভগবানের আশীর্বাদে সব কিছু আবার আগের মতো হয়ে যাবে— বাবা-মা’র থেকে পাওয়া এই ভরসাই শক্ত করেছিল প্রমিতাকে।
জানা গিয়েছে, প্রথমে লখনউয়ের এক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল প্রমিতাকে। পরে কেমোথেরাপির জন্য গুরুগ্রামের মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। জানুয়ারি মাসে তার অস্থি-মজ্জা প্রতিস্থাপন হয়। তার বাবার কথায়, ‘‘রোগ এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও পাঁচ বছর সময় লাগবে।’’
হাসপাতালে চিকিৎসা চলার সময়ও পুরোদমে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে প্রমিতা। হাসপাতালের বেডে বসেই প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মের পরীক্ষা দিয়েছে সে। এ জন্য সাহায্য করেছে তার স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। প্রমিতার জন্য অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
হাসপাতালে কাটানো কঠিন দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রমিতা বলেছে, ‘‘বই নিয়ে গিয়েছিলাম হাসপাতালে। কখনও পড়তে হবে বলে জোর করে পড়তাম না। কিন্তু যখন পড়তাম, মন দিয়ে পড়তাম।’’
প্রমিতাকে সাহায্য করেছে তার বন্ধু অপর্ণা ত্রিপাঠীও। নোট দেওয়ার পাশাপাশি ভিডিয়ো কলে রোজ প্রমিতাকে ভরসা জোগাত অপর্ণা। এমনকি দুই বন্ধুর মধ্যে ‘গসিপ’ও চলত।
আগামী দিনে চিকিৎসক হতে চায় প্রমিতা। হাসপাতালে থাকাকালীন চিকিৎসকদের থেকে এ নিয়ে পরামর্শও শুনেছে সে।