পাবজি গেম খেলতে না দেওয়ায় লখনউয়ে মাকে গুলি করে খুন কিশোরের। ফাইল চিত্র।
হঠাৎ একটা শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল বছর দশেকের মেয়েটির। চোখ খুলতেই শিউরে উঠেছিল সে। সামনে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে তার দাদা। আর তার পাশে বিছানাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় নিথর হয়ে প়ড়ে মায়ের দেহ। এই দৃশ্য দেখেই কথা হারিয়ে ফেলেছিল সে। বুঝতে পেরেছিল মাকে গুলি করে দাদা-ই খুন করেছে। কিন্তু দাদার সেই সময়ের মূর্তি দেখে ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছিল।
পাবজি খেলতে বাধা দেওয়ায় গত শনিবার লখনউয়ে মাকে গুলি করে খুন করে বছর ষোলোর এক কিশোর। সে দিন ঠিক কী হয়েছিল সেই ভয়ঙ্কর কাহিনি পুলিশকে শোনাল তারই বোন।
সে জানিয়েছে, দাদার রুদ্রমূর্তি দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। এক ছুটে পাশের ঘরে গিয়ে কাঁদতে শুরু করে। পিছু পিছু দাদাও ওই ঘরে আসে। বোনকে ধমকায়, এই কথা যেন ঘুণাক্ষরেও কেউ টের না পায়। মুখ খুললে তারও এই হাল হবে বলে ভয় দেখায়। তার পর থেকে ওই ঘরেই নিজেকে বন্দি করে রেখেছিল বছর দশেকের মেয়েটি।
পুলিশকে মেয়েটি বলে, “মাকে খুন করার পরের দিন দাদা বন্ধুদের ডেকে নিয়ে আসে বাড়িতে। তার পর পার্টিও করে।” সে জানিয়েছে, দু’দিন ধরে কিছু না খেয়েই ঘরের মধ্যে বন্দি ছিল। খিদে সহ্য করতে না পারায় কান্নাকাটি করতে দাদা নিজেই খাবার বানিয়ে তাকে খাওয়ায়।
মেয়েটি বলে, “দাদার বন্ধুরা পার্টি করার জন্য বাড়িতে এসেছিল। তাদের বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু দাদা হুমকি দিয়েছিল, কাউকে কিছু বললে আমাকেও গুলি মেরে খুন করবে। তাই সুযোগ থাকলেও বলার সাহস পাইনি।” তার দাবি, দাদা একদম নির্বিকার ছিল। মায়ের দেহের পাশেই রাতে শুয়ে পড়ত। দু’দিন পর পচা গন্ধ বেরোতে রুম ফ্রেশনার দেওয়া শুরু করে দাদা। এ ভাবে তিন দিন মায়ের শবের পাশেই শুয়ে ছিল সে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর পুলিশ ওই কিশোরকে গ্রেফতার করে। খবর পেয়ে কিশোরের বাবা নবীন সিংহ বাড়িতে আসেন। ছেলেকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘কী করে এই কাজ করলি তুই?’’ তার উত্তরে কিশোর বলে, “তুমি কি আমার খেয়াল রাখতে?”