গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
উত্তরপ্রদেশে ঘটা করে ‘লভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে আইন পাশ করেছিল যোগী আদিত্যনাথ সরকার। সেই আইন বলবৎ হওয়ার এক মাস পূর্ণ হল। এই ৩০ দিনে ওই আইনে ১৪টি মামলা দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। মোট ৫১ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৪৯ জন এখনও জেলে রয়েছেন।
সেখানকার সরকারি রিপোর্ট অনুসারে, ১৪টি মামলার মধ্য ১৩টি মামলাই হিন্দু মেয়েদের সংক্রান্ত। এই মামলাগুলিতে হিন্দু মেয়েদের জোর করে মুসলিমে রূপান্তরিত করার চেষ্টা হয়েছিল বলে অভিযোগ। মোট ১৪টি মামলার মধ্যে নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের হয়েছে মাত্র ২টি মামলা। বাকি মামলাগুলি দায়ের হয়েছে আত্মীয় স্বজনের অভিযোগের ভিত্তিতে।
অন্যদিকে এই মামলাগুলির মধ্যে ৮টি ক্ষেত্রে যুগলরা ধর্মান্তরণের অভিযোগ মানেননি। তাঁরা নিজেদেরকে বন্ধু হিসাবে বলেছেন। কিংবা জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে 'স্বেচ্ছায় সম্পর্ক' রয়েছে। এক যুগল তো স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন বলেও জানিয়েছেন। জোর করে খ্রিস্টান ধর্মে রূপান্তরিত করার একটি মামলাও রয়েছে এর মধ্যে। এই মামলায় আজমগড়ের ৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। বাকি মামলাগুলির ৩টি বিজনৌরের, ২টি শাহজাহানপুরের। বাকি বরেলি, মুজফ্ফরনগর, মৌ, সীতাপুর, হারদই, কনৌজ এবং মোরাদাবাদ জেলার।
যোগী সরকাররের আনা এই আইন ২৭ নভেম্বর মঞ্জুর করেন উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেল। ২৮ নভেম্বর থেকে তা যোগী রাজ্যে লাগু হয়। এই আইনে প্রথম মামলাটি দায়ের হয়েছিল বরেলিতে। একটি মেয়ের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে। তবে এই আইন লাগু করা নিয়ে সারা দেশে চর্চা কম হয়নি। অনেকেই এই আইনের সমালোচনাও করেছেন। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও। তিনি এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘এখন ‘ক্রিমিনাল অ্যাক্ট অব লভ জিহাদ’ বলা হচ্ছে। তলিয়ে দেখলে বোঝা যায় ‘লভ’ বা প্রেমের মধ্যে কোনও ‘জিহাদ’ নেই। একে মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে মনে হচ্ছে। জীবন যাপনের অধিকার তো মৌলিক অধিকার হিসেব স্বীকৃত। কিন্তু এই আইনের ফলে মানবাধিকার লঙ্খন করা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: ৬৪ বছরে ডাক্তারি পড়তে ঢুকেছেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী