Lok Sabha Election 2019

অন্তরীক্ষেই থাকুন মোদী, ডাক ইয়েচুরির

ছাত্র সংগঠনের রাজনীতিতে ইয়েচুরির সতীর্থ ছিলেন নেপালদেব ভট্টাচার্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়দহ শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ০২:৫৯
Share:

পাশাপাশি: দমদম কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী নেপালদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরি। নিজস্ব চিত্র

বিমান হানা, উপগ্রহ, ক্ষেপণাস্ত্র, রাডার। এ সব নিয়েই এখন মজে আছেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে আকাশ-কুসুমে থাকতে দিয়ে পায়ের তলা থেকে জমি কেড়ে নেওয়ার জন্য জনতার কাছে আবেদন জানালেন সীতারাম ইয়েচুরি।

Advertisement

দমদম লোকসভা কেন্দ্রের খড়দহে প্রচারে এসে সোমবার সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক বললেন, ‘‘মোদী শুরু করেছিলেন চৌকিদার হয়ে। চৌকিদার জমি, বাড়ি পাহারায় থাকে। কিন্তু ভোটের মুখে এসে মোদী বালাকোটে বিমান হানা, অন্তরীক্ষে ‘মিশন শক্তি’ নিয়ে প্রচার শুরু করলেন। এ বার দু’দিন আগে বলে বসেছেন, মেঘের আড়াল থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান নাকি রাডার ফাঁকি দিয়ে পাকিস্তানে হানা দিয়ে এসেছে। রাডারের কাজ, সেনার কাজ, প্রযুক্তিবিদদের কাজ— কোনও কিছু নিয়েই তাঁর ধারণা নেই। তিনি অন্তরীক্ষেই থাকুন! মাটির বাস্তবে তাঁর আর ফেরার দরকার নেই, আপনারাও সেই সুযোগ তাঁকে দেবেন না!’’ মোদীর ‘তুঘলকি-রাজ’ হটিয়ে ভোটের পরে কেন্দ্রে বিকল্প সরকার গড়ে উঠবে এবং তাতে বামেদের ভূমিকা থাকবে, এই দাবিওে করেছেন ইয়েচুরি।

ছাত্র সংগঠনের রাজনীতিতে ইয়েচুরির সতীর্থ ছিলেন নেপালদেব ভট্টাচার্য। পুরনো সেই বন্ধুর হয়ে খড়দহ থেকে বরানগরের প্রগতি ময়দান পর্যন্ত ৭-৮ কিলোমিটার রোড-শো করতে এসেছিলেন সিপিএমের শীর্ষ নেতা। রণ-পা, আদিবাসী নৃত্য-সহযোগে প্রস্তুতি ছিল সম্পূর্ণ। কিন্তু পুলিশের অনুমতি না মেলায় সংক্ষিপ্ত মিছিল ছাড়া এ দিন রোড-শো আর হয়নি। খড়দহে রবীন্দ্র ভবনের সামনে ইয়েচুরির সভা ঘিরে ভিড় জমেছিল ভালই। বি টি রোডের এক দিক বন্ধ করে সভা চালানোর পরে ইয়েচুরির সঙ্গে নিজস্বী তোলা, হাত মেলানোর ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রণ-পা, আদিবাসী নৃত্য-সহযোগে রোড-শো। নিজস্ব চিত্র

বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলকেও একই তিরে বিঁধেছেন ইয়েচুরি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাংলায় এসে দেখছি, শুধু বিজেপি আর তৃণমূলের লড়াই নিয়েই চারদিকে প্রচার হচ্ছে। তৃণমূল বলছে, দেশে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য তাদের ভোট দিতে হবে। বাংলায় যারা গণতন্ত্র হত্যা করে চলেছে, তারা দেশে গণতন্ত্র কী ভাবে রক্ষা করবে— আপনারা ভালই জানেন। বিজেপি ত্রিপুরায় এমন ভাবে লোকসভা ভোট করেছে, একটি কেন্দ্রে নির্বাচন পিছিয়েছে। অন্যটায় ১৬৮ বুথে পুনর্নির্বাচন হয়েছে, সব বুথে ফের ভোটের দাবিতে মামলা এবং রাস্তায় আন্দোলন চলছে। সেই বিজেপি বাংলায় এসে বলছে, গণতন্ত্র বাঁচান!’’ গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ এবং মেরুকরণের রাজনীতিতে দু’দলের ফারাকই নেই বলে যুক্তি দিয়ে বামপন্থীদের সমর্থন করার আর্জি জানিয়েছেন ইয়েচুরি।

খড়দহে রবীন্দ্র ভবনের সামনে ইয়েচুরির সভা ঘিরে ভিড়। নিজস্ব চিত্র

অতীতের উদাহরণ দিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, রাজীব গাঁধীর সরকারের পরে ভি পি সিংহ, চন্দ্রশেখর, ইন্দ্রকুমার গুজরাল, অটলবিহারী বাজপেয়ী বা মনমোহন সিংহ— সব জোট সরকারই তৈরি হয়েছিল ভোট-পরবর্তী সমীকরণে। ইউপিএ আমলে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচিতে বামেদের হস্তক্ষেপের জন্যই ১০০ দিনের কাজ, বনাঞ্চলের অধিকার, খাদ্যের অধিকারের মতো প্রকল্পের সুফল মানুষ পেয়েছিলেন। সেই ধারা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই বামেদের সমর্থন করার ডাক দিয়েছেন ইয়েচুরি। খড়দহ সেরে বিধাননগরে গিয়ে বারাসত কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী হরিপদ বিশ্বাসের সমর্থনে সভাতেও একই আহ্বান ছিল তাঁর গলায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement