‘চাকরি-তথ্যই নেই, গালি কেন!’

রাহুল গাঁধী ২০১৯-এর ভোটে মোদী জমানার বেকারত্ব বেড়ে যাওয়া এবং নতুন চাকরি না হওয়াকেই প্রধান হাতিয়ার করতে চাইছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

তাঁর সরকার বেকারত্বের তথ্য লুকিয়ে রেখেছিল বলে অভিযোগ। আর সেই তথ্য ফাঁস হওয়ার পর দেখা গিয়েছে, নোট বাতিলের পরে বেকারত্ব তুঙ্গে উঠেছে।

Advertisement

কিন্তু নরেন্দ্র মোদী উল্টে নিজেই আজ প্রশ্ন তুললেন, ‘‘যদি কোনও পরিসংখ্যানই না থাকে, তা হলে গালমন্দ করার অধিকার কোথা থেকে এল?’’ যাঁরা মোদী জমানায় নতুন রোজগার বা কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি, উল্টে চাকরি খোয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ করছেন, তাঁদের থেকেই পরিসংখ্যান দাবি করে মোদীর যুক্তি, ‘‘যদি ওঁদের কাছেই তথ্য না থাকে, তার জন্য কি আমাকে গালমন্দ করার অধিকার পাওয়া যায়?’’

রাহুল গাঁধী ২০১৯-এর ভোটে মোদী জমানার বেকারত্ব বেড়ে যাওয়া এবং নতুন চাকরি না হওয়াকেই প্রধান হাতিয়ার করতে চাইছেন। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কর্মসংস্থানের সমস্যার সমাধানে কী করবে, তা বোঝাতে কংগ্রেসের ইস্তাহারের প্রথম অধ্যায়েই থাকবে চাকরি, রোজগারের বিষয়।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আজ প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পরে কংগ্রেস পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে, বিরোধীদের যদি প্রধানমন্ত্রীকে সমালোচনা করার অধিকার না থাকে, তা হলে প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যে কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে? কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘গালির জগৎগুরু নরেন্দ্র মোদী প্রথম চাকরি বিনাশকারী প্রধানমন্ত্রী। সিএমআইই-র রিপোর্ট বলেছে, ২০১৮-য় ১ কোটি মানুষ কাজ খুইয়েছেন। নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিল, জিএসটি করে চাকরির উপরে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছেন।’’

প্রধানমন্ত্রী মোদী ও অরুণ জেটলিরা আগে দাবি করেছিলেন, আর্থিক বৃদ্ধির হার যখন ৭ শতাংশ, তখন নিশ্চয় চাকরি হচ্ছে। কিন্তু রঘুরাম রাজন সম্প্রতি উল্টে প্রশ্ন তুলেছেন, চাকরি যখন হচ্ছে না, তখন সত্যিই ৭ শতাংশ হারে আর্থিক বৃদ্ধি হচ্ছে তো! বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ আবার গতকাল চাকরি যাওয়ার অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়ে বলেছিলেন, এক ক্ষেত্রে কাজ গেলেও, আরেক ক্ষেত্রে চাকরি হয়েছে।’’ কিন্তু তার হিসাব কোথায়?

ঘটনা হল, মোদী জমানাতেই শ্রমিক ব্যুরোর ত্রৈমাসিক কর্মসংস্থানের পরিসংখ্যান প্রকাশ বন্ধ হয়েছে। এনএসএসও-র সমীক্ষা প্রকাশ করা হয়নি। মোদী আজ দাবি করেন, ‘‘চাকরির সংখ্যা জানতে নতুন ব্যবস্থা তৈরির চেষ্টা করছি। যাতে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়।’’ জয়রামের অভিযোগ, এ নিয়ে নীতি আয়োগের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ অরবিন্দ পানাগাড়িয়ার রিপোর্টও ধাপাচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। নরেন্দ্র মোদী আজকেও পুরনো সুরে দাবি করেছেন, রাস্তা-সড়ক দ্বিগুণ বেগে তৈরি হচ্ছে। সেখানে তো কাজের লোক লাগছেই। প্রভিডেন্ট ফান্ডের খাতায় নতুন ১ কোটি নাম উঠেছে। ১৭ কোটি মুদ্রা ঋণের মধ্যে ৪ কোটি নতুন ঋণ। উদ্যোগপতিরা নতুন ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে ২-৪ জনকে চাকরি দিচ্ছেন। এ সব মানতে হবে। আর জয়রাম বলেন, ‘‘মুদ্রা যোজনায় ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে গড় ঋণের পরিমাণ ২৫ হাজার টাকা। ওই টাকায় কে নিজে রোজগার করবে, কে অন্যদের চাকরি দেবে।’’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর যুক্তি, ‘‘অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের সময়ও বলা হয়েছিল, কর্মসংস্থান হয়নি। পরে জানা যায়, ৬ কোটি চাকরি হয়েছে। অথচ ইউপিএ-সরকারের আমলে মাত্র দেড় কোটি চাকরি হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement