চলছে তৃতীয় দফার লকডাউন। দেশের বিভিন্ন অংশে দীর্ঘদিন ধরেই আটকে রয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিক, তীর্থযাত্রী, পর্যটক, পড়ুয়া-সহ অনেকে। তাঁদের সংখ্যাটাও অনেক। লকডাউনের সময় যত বেড়েছে ততই তাঁদের বাড়ি ফেরানোর দাবি জোরালো হয়েছে। চালানো হয়েছে বেশ কিছু শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন। এই আবহেই মঙ্গলবার থেকে প্যাসেঞ্জার ট্রেন পরিষেবা চালু করতে চলেছে রেল।
টানা প্রায় ছ’সপ্তাহ ধরে পরিষেবা বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার থেকে ধাপে ধাপে ট্রেন চালাতে চলেছে রেল মন্ত্রক। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, নয়াদিল্লি থেকে ১৫ জোড়া ট্রেন চালানো হবে।
১৭ মে শেষ হচ্ছে তৃতীয় দফার লকডাউন। তার আগেই মঙ্গলবার অর্থাৎ ১২ মে থেকে চালু হয়ে যাচ্ছে রেল পরিষেবা। ট্রেন চলবে দিল্লি থেকে ভারতের ১৫টি শহরে।
ট্রেনগুলি চলবে দিল্লি থেকে হাওড়া, ডিব্রুগড়, আগরতলা, পটনা, বিলাসপুর, রাঁচী, ভুবনেশ্বর, সেকেন্দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, তিরুঅনন্তপুরম, মডগাঁও, মুম্বই সেন্ট্রাল, আমদাবাদ ও জম্মু-তাওয়াইয়ের মধ্যে। যাত্রাপথে হাতে গোনা কয়েকটি স্টেশনে দাঁড়াবে প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলি।
তবে ওই ট্রেনের জন্য রেলের রিজার্ভেশন কাউন্টার থেকে টিকিট পাওয়া যাবে না। ওই কাউন্টার আপাতত যেমন বন্ধ রয়েছে তেমনই থাকবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্যাসেঞ্জার ট্রেনের জন্য টিকিট বুক করা যাবে আইআরসিটিসির ওয়েবসাইট থেকে। নিজস্ব প্রোফাইল থেকে বুক করতে হবে টিকিট।
আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইট https://www.irctc.co.in/। সোমবার থেকে শুরু বুকিং।
ট্রেন ছাড়ার নির্দিষ্ট সময়ের ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত অনলাইনে টিকিট বাতিল করা যাবে। টিকিট বাতিলের জন্য ভাড়ার ৫০ শতাংশ কাটা যাবে।
ট্রেনের কামরার মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে রেল। এ জন্য থ্রি-টিয়ার কামরাগুলির মাঝের আসনটি খোলা হবে না।
যাত্রীদের জন্যও নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাঁদের মুখে ঢাকা দেওয়া বা ‘ফেস কভার’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া ট্রেনে ওঠার আগে প্রত্যেক যাত্রীকেই স্ক্রিনিংযের মধ্যে দিতে যেতে হবে। জ্বর বা কোনও রকম অসুস্থতার লক্ষণ না থাকলে তবেই ট্রেনে ওঠার ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
রেল বিশেষ প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালানোর ঘোষণা করতেই তার ভাড়া কত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ওই ট্রেনগুলির ভাড়া হবে রাজধানী এক্সপ্রেসের মতোই, কারণ ওই ট্রেনগুলি পুরোটাই এসি কামরা। ফলে তার ভাড়া হবে প্রিমিয়াম ক্যাটেগরির।
তৃতীয় দফার লকডাউন শেষ হওয়ার আগে ট্রেন পরিষেবা চালু হতে যাচ্ছে। তবে এ জন্য ট্রেন ভাড়ায় কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।
যাত্রীদের থেকে কেটারিং চার্জ নেওয়া হবে না। কারণ আগে থেকে খাবার বুক করার পরিষেবা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। আইআরসিটিসি যাত্রীদের অর্থের বিনিময়ে সীমিত খাবার ও প্যাকেটজাত জল সরবরাহ করবে।
স্টেশনে ঢোকার জন্য বৈধ কনফার্মড টিকিট লাগবে যে কোনও যাত্রীর। না হলে কেউ স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবেন না।
প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যাত্রীদের কম্বল দেওয়া হবে না। ট্রেন ছাড়ার এক ঘণ্টা আগে স্টেশনে পৌঁছতে হবে। যাত্রীদের মোবাইলে আরোগ্য সেতু অ্যাপ থাকা এবং নথিভুক্ত থাকা বাধ্যতামূলক।
প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালানো হলে কি বন্ধ হয়ে যাবে ‘শ্রমিক স্পেশাল’? রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, দু’টি পরিষেবাই চালু থাকবে। অর্থাৎ ‘শ্রমিক স্পেশাল’ যেমন চলছে চলবে। সেই সঙ্গে চালু হচ্ছে প্যাসেঞ্জার ট্রেনও।
২২ মার্চ মধ্যরাত থেকে যাত্রিবাহী ট্রেন চালানো বন্ধ করে দিয়েছিল রেল। এত দিন শুধু মালগাড়ি চলেছে। সম্প্রতি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্যও বিশেষ ট্রেন চালু হয়েছে। এ বার চালু হচ্ছে প্যাসেঞ্জার ট্রেনও।