মেঘালয়ে ভোটপ্রচারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: টুইটার
ভোটমুখী মেঘালয়ে প্রচারে এসে গোয়া মডেলেই আস্থা রাখার ইঙ্গিত দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মেঘালয়ের মেদিপাথরে ভোটপ্রচারে এসে রাজ্যের বিজেপি-এনপিপি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন অভিষেক। তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য থেকে বাদ যায়নি গত বিধানসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হওয়া কংগ্রেসও। মেঘালয়ের বর্তমান জোট সরকারকে ‘আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে কটাক্ষ করে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটিতেও জোড়াফুল ফোটানোর ডাক দিয়েছেন তিনি।
ভোটমুখী মেঘালয়ে এক দিনের সফরে এসেছেন অভিষেক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভা শুরুর আগে স্থানীয় আদিবাসীদের নাচের তালে পা মেলাতে দেখা যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। স্থানীয় উপজাতিদের বিশেষ মুকুট পরে মঞ্চে ওঠেন মমতা এবং অভিষেক। অভিষেকের বক্তব্যেও উঠে আসে আঞ্চলিক কৃষ্টি ও স্থানীয় সংস্কৃতির কথা। রাজ্যের বিজেপি-এনপিপি সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “গুয়াহাটি কিংবা দিল্লি থেকে মেঘালয় চলবে না। মেঘালয় চালাবেন এখানকার ভূমিপুত্ররাই। তৃণমূল কংগ্রেস সেটা নিশ্চিত করবে।” প্রসঙ্গত, লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার পিএ সাংমার দল এনপিপি বিজেপির নেতৃত্বাধীন উত্তর-পূর্ব ভারতের দলগুলির জোট ‘নেডা’র সদস্য। এই নেডার তত্ত্বাবধান করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। বিরোধীদের অভিযোগ, কার্যত তাঁর অঙ্গুলিহেলনেই চলে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সরকার। দিল্লি এবং গুয়াহাটির প্রসঙ্গ টেনে অভিষেক সে দিকেই কটাক্ষ করতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গোয়া বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে অভিষেক এবং অন্য তৃণমূল নেতারা কংগ্রেসকে ভোট না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। কার্যত একই সুরে অভিষেক বুধবার সমবেত জনতার উদ্দেশে বললেন, “কংগ্রেসকে ভোট দেবেন না। মাথায় রাখবেন, কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া।” এই প্রসঙ্গে তিনি মধ্যপ্রদেশে সরকার গড়েও বিধায়কদের ধরে রাখতে না পারা, গোয়ার বিধায়কদের বিজেপিতে চলে যাওয়া ইত্যাদি উদাহরণকে সামনে রেখেছেন।
অভিষেক জানান, আগামী ৫০ দিন মেঘালয়ের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যের বর্তমান শাসক জোট ক্ষমতায় আর থাকবে না বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি জানান, তৃণমূল ক্ষমতায় এসে মেঘালয়ের পুরনো সম্মান ফিরিয়ে আনবে। বুধবারই মেঘালয়ের ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই ওই রাজ্যের ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রের ৫২টিতে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। বাকি ৮টি আসনেও শীঘ্রই প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে তারা। রাজ্যে ১২ জন তৃণমূল বিধায়কের মধ্যে সম্প্রতি ৩ জন বিপক্ষ শিবিরে যোগ দিয়েছেন। এই ঘটনা অস্বস্তি বাড়িয়েছে তৃণমূলের। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা মুকুল সাংমার নেতৃত্বেই বিধানসভা নির্বাচন লড়বে তৃণমূল। গোয়াতেও প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা এবং মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফালেইরোকে সামনে রেখে নির্বাচনে লড়েছিল তৃণমূল। অবশ্য ভোটবাক্সে তেমন সুবিধা করতে পারেনি তারা। গোয়া মডেলে রণকৌশল সাজিয়ে তৃণমূল মেঘালয় জয় করতে পারে কি না, তা জানতে বেশ কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে।