যোগী আদিত্যনাথ ও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার উপরে চাপ সব থেকে বেশি। কিন্তু যোগী আদিত্যনাথ, বিজয় রূপাণী ও শিবরাজ সিংহ চৌহানকেও মঙ্গলবার পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে।
বিহারের ভোটের মধ্যেই মঙ্গলবার ১০টি রাজ্যের ৫৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। তার মধ্যে ২৮টি মধ্যপ্রদেশে। গুজরাতে ৮টি ও উত্তরপ্রদেশে ৭টি আসনে ভোট। কোভিড অতিমারির পরে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের মতোই এই সব রাজ্যে প্রথম ভোট হচ্ছে। ফলে লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা থেকে করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় রাজ্যের কাজকর্মের অ্যাসিড টেস্ট হিসেবেও একে দেখা হচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যায় উপনির্বাচনের প্রচার শেষ হয়ে যাওয়ার পরে বিজেপি ও কংগ্রেস, দুই দলের নেতারাই এক বাক্যে একটি কথা বলছেন। তা হল, মধ্যপ্রদেশের উপনির্বাচন গ্বালিয়রের মহারাজা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার রাজনৈতিক পরীক্ষা। তিনি কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই তাঁর সঙ্গে কংগ্রেসের ২৫ জন বিধায়ক দল ছাড়েন। তার জেরেই মধ্যপ্রদেশে কমলনাথ সরকারের পতন হয়। যে ২৮টি আসনে উপনির্বাচন, তার মধ্যে ২৫টিতেই সিন্ধিয়ার অনুগামীদের পদত্যাগের জেরে ভোট হচ্ছে। ২৩০ আসনের বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য বিজেপির ১১৬ জন বিধায়ক দরকার। রয়েছে ১০৭ জন। বিজেপি মাত্র ৯টি আসন জিতলেই শিবরাজের সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতার অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলবে।
আরও পড়ুন: ভোটের বিহারে আজ দ্বৈরথে মোদী-রাহুল
উল্টো দিকে কংগ্রেস ২৮টির মধ্যে ২৮টি জিতলে ফের ক্ষমতায় ফিরতে পারে। তবে কংগ্রেস নেতারা তেমন আশা করছে না। সিন্ধিয়ার চিন্তার কারণ হল, ২৮টির মধ্যে ১৬টি আসনই তাঁর নিজের গ্বালিয়র-চম্বল এলাকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহও এই এলাকায় নিজের দাপট প্রমাণে মরিয়া। সিন্ধিয়া তাঁর অনুগামীদের কত জনকে জিতিয়ে আনতে পারেন, তার উপরে তাঁর বিজেপিতে উত্থানও নির্ভর করছে। বিজেপির নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, রাজ্যসভায় জিতিয়ে এনেই সিন্ধিয়াকে মন্ত্রী করা হবে বলে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে সংসদীয় কমিটির সদস্য মনোনীত করা হয়েছে। কেন্দ্রে মন্ত্রী হওয়ার আগে সিন্ধিয়াকে উপনির্বাচনে নিজের শক্তির প্রমাণ দিতে হবে।
মধ্যপ্রদেশের মতোই গুজরাতে কংগ্রেসের বিধায়করা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়াতেই নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্যে ৮টি আসনে উপনির্বাচন। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসা সাত জনের মধ্যে পাঁচ জন প্রার্থী। সরাসরি ভোটপ্রচারে না গেলেও প্রধানমন্ত্রী প্রচারপর্বে গুজরাতে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। কিন্তু কংগ্রেসের দাবি, আটটিতেই ফের কংগ্রেস জিতবে।
আরও পড়ুন: মোদী-চিনফিং তিন বার দেখা হবে নভেম্বরেই
উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সিএএ-বিরোধীদের উপর দমনমূলক নীতি, পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা নিয়েও যোগী সরকারকে সমালোচনা শুনতে হয়েছে। উল্টো দিকে যোগী রামমন্দির ঘিরে আবেগ, ‘লাভ জেহাদ’ নিয়ে হুমকি দিয়ে খেলা ঘোরাতে চাইছেন।