রামমন্দির এলাকা জীবাণুমুক্ত করছে দমকল। ৫ অগস্ট এখানে ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। পিটিআই
তিনি কি রামমন্দিরের শিলান্যাসে আমন্ত্রিত? তাঁকে কি নিমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে? তিনি কি অযোধ্যায় যাবেন? না কি ভিডিয়ো কনফারেন্সে যোগ দেবেন?
রামমন্দির তৈরির আন্দোলনে রথযাত্রায় লালকৃষ্ণ আডবাণীই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বুধবার রামমন্দিরের শিলান্যাস হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে। মাত্র তিন দিন আগে, আজও আডবাণীর অযোধ্যার অনুষ্ঠানে যোগদান নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে গেল।
শনিবার পর্যন্তও আডবাণী ও রামমন্দির আন্দোলনের আর এক কাণ্ডারী মুরলীমনোহর জোশীকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের আধিকারিক প্রকাশ কুমার গুপ্ত আজ জানিয়েছেন, আডবাণী ও জোশী-সহ সকলকেই আমন্ত্রণ জানিয়ে ই-মেল পাঠানো হয়েছে। প্রত্যেককে টেলিফোনও করা হয়েছে। তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট সূত্রের খবর, আডবাণী ও জোশী ভিডিয়ো কনফারেন্সে যোগ দেবেন। তার ব্যবস্থা চলছে। কিন্তু এই কথাটুকুও সরকারি ভাবে জানাতে কেউ রাজি নন। আডবাণীর ঘনিষ্ঠ শিবির থেকে আজ জানানো হয়েছে, অযোধ্যা থেকে টেলিফোন এসেছিল ঠিকই। কিন্তু বুধবারের অনুষ্ঠানে যোগদান নিয়ে এখনও কিছুই ঠিক হয়নি। শনিবারই উমা ভারতী, কল্যাণ সিংহরা টেলিফোন পেয়েছিলেন। টেলিফোনে আমন্ত্রণের তালিকাতেও কেন আডবাণী অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই, তা নিয়ে বিজেপি-আরএসএস শিবিরে আলোচনা তুঙ্গে। কেন শেষবেলায় তাঁকে অনাদরের সঙ্গে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিরোধী শিবিরের নেতারাও নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের জমানায় আডবাণীকে এই ভাবে পিছনের সারিতে ঠেলে দেওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। তাঁদের মতে, মোদী আসলে কাউকেই প্রচারের আলো ছাড়তে রাজি নন। না হলে তিনি আডবাণীর সঙ্গে কথা বলতেন।
আরও পড়ুন: শিলান্যাস ধুমধামে কংগ্রেস দোটানায়
এরই মধ্যে আজ বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী একটি বৈদ্যুতিন মাধ্যমের অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন, ‘‘রামমন্দির তৈরির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোনও অবদান নেই।’’ তাঁর যুক্তি, তিনি ও অন্যান্যরাই বারবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে দ্রুত শুনানি শুরু করার আর্জি জানিয়েছেন। আডবাণী ও জোশী দু’জনেই বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় লখনউয়ের আদালতে ভিডিয়ো কনফারেন্সে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আডবাণীর সাক্ষ্যের আগে ২২ জুলাই অমিত শাহ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময়েও অযোধ্যার অনুষ্ঠানের বিষয়ে কোনও কথা হয়নি বলেই বিজেপি সূত্রের খবর। অযোধ্যার প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে মোট ১৮০ জন আমন্ত্রিত। সাধুসন্তদের সংখ্যা বেশি। আরএসএস-বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শীর্ষনেতারা থাকবেন। পাঁচ জন মঞ্চে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল, সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত এবং তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নৃত্যগোপাল দাস। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা ও ভূমি পুজোর জন্য দু’টি পৃথক মণ্ডপ তৈরি হতে পারে।
ট্রাস্টের আধিকারিক প্রকাশ কুমার গুপ্ত আজ বলেছেন, দীর্ঘযাত্রায় এখন কারও অসুবিধা থাকতে পারে। কিন্তু তা বলে কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না, এমনটা নয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্বাস্থ্যবিধি মানলে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে কারও জমায়েতে যাওয়া উচিত নয়। ৯২ বছরের আডবাণী ও ৮৬ বছরের জোশীর সে কারণেই ভিডিয়ো কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া ঠিক হবে বলে আজ বিজেপি নেতারা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক শিবিরের যুক্তি, সেই স্বাস্থ্যবিধি মানলে তো ৬৯ বছরের মোদীরও অযোধ্যায় যাওয়া উচিত নয়।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত অমিত শাহ, ভর্তি হাসপাতালে