লখিমপুরের পথে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা ও রাহুল গাঁধী। টুইটার থেকে নেওয়া।
লখিমপুর খেরি নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা কমার নাম নেই। মঙ্গলবার পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে তৃণমূলের সাংসদরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন। বুধবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলিকে লখিমপুর যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। কিন্তু কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর সেখানে যাওয়া নিয়ে সমস্যা দানা বাঁধে। লখনউ বিমানবন্দরে নামার পর রাহুল ও তাঁর দুই সঙ্গীকে বেরোতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। বলা হয়, উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে তাঁদের যাতায়াতের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি গাড়ি নিতে অস্বীকার করেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কী ভাবে যাব তা উত্তরপ্রদেশ সরকার ঠিক করে দিতে পারে না। আমি আমার গাড়িতেই যাব।’’ এর পর রাহুলকে বিমানবন্দর থেকে বেরোতে বাধা দেওয়া হয় বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। যদিও যোগীরাজ্যের পুলিশ প্রশাসন সেই দাবি মানতে চায়নি।
সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ রাহুল সীতাপুরের দিকে রওনা দেন। সীতাপুরের অতিথি নিবাস থেকে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে নিয়ে রাহুল ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নীর সঙ্গে লখিমপুরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। লখিমপুরে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা সচিন পায়লটের। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লখিমপুরের উদ্দেশে রওনা দেওয়া সচিন ও আচার্য প্রমোদকে উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে আটক করা হয়েছে।
আম আদমি পার্টি (আপ)-র একটি প্রতিনিধি দল বুধবার লখিমপুর খেরিতে গিয়ে মৃত কৃষকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। টেলিফোনে অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গেও মৃতের পরিজনদের কথা বলিয়ে দেন আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। লখিমপুর খেরির ঘটনা নিয়ে পথে নামছে পঞ্জাব কংগ্রেসও। পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা পারগৎ সিংহ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ১০ হাজার গাড়ির কনভয় নিয়ে লখিমপুরের উদ্দেশে যাত্রা করবেন কংগ্রেস নেতা কর্মীরা। একই দিনে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবও লখিমপুর যাবেন বলে খবর।
অন্য দিকে, কেন তৃণমূলকে লখিমপুর ঢুকতে দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল। কলকাতা থেকে তার জবাব দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘‘পুলিশ তৃণমূলকেও ঢুকতে বাধা দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে আমাদের প্রতিনিধিরা মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। কংগ্রেস যা করতে পারেনি।’’
কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত ঘোষণা করেছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি ও তাঁর ছেলেকে দ্রুত গ্রেফতার না করা হলে বড় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবেন কৃষকরা। অন্য দিকে, বিরোধীদের দাবি, ইস্তফা দিতে হবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয়কে। সপুত্র টেনিকে গ্রেফতার করার দাবিও উঠেছে। সূত্রের খবর, লখিমপুর-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অজয় ইস্তফা দিচ্ছেন না। তবে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করার কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এমনটাই জানা যাচ্ছে। যদিও ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও অধরা মন্ত্রী পুত্র আশিস মিশ্র।