Sabyasachi Dutta

Sabyasachi Dutta: ফের দ্বৈরথে সব্যসাচী, লখিমপুর-কাণ্ড নিয়ে দলবিরোধী বক্তব্যে ফুলবদলের জল্পনা

লখিমপুর খেরির ঘটনার নিন্দা করাই শুধু নয়, সেখানে তৃণমূল-সহ বিরোধীদের যেতে না দেওয়ার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন সব্যসাচী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২১ ১৯:১৬
Share:

আবার বেসুরো সব্যসাচী। ফাইল চিত্র

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে এসে বিধানসভা নির্বাচনে বিধাননগরে পদ্মের প্রার্থী হয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। জিততে পারেননি। দলও ক্ষমতায় আসেনি। ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই বারবার সব্যসাচীর সঙ্গে বিজেপি-র মতবিরোধ এবং দূরত্ব বৃদ্ধির খবর পাওয়া যায়। সদ্যই বিজেপি-র দুর্গাপুজো নিয়ে সব্যসাচীএবং বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মতবিরোধ তৈরি হয়। এ বার লখিমপুর খেরিতে কৃষক মৃত্যু নিয়েই একই ধারা বজায় থাকল। বুধবার সব্যসাচী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘কার গাড়ি সেটা বড় কথা নয়,যে ঘটনা ভাইরাল হয়েছে টিভিতে খুব দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা। যে বা যারাই এটা করে থাকুক তাদের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি এবং তাদের একটাই শাস্তি হওয়া উচিত ফাঁসি।’’

Advertisement

সব্যসাচী এখন বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক পদে রয়েছেন। সদ্যই তাঁকে খড়দহ উপনির্বাচনের জন্য তৈরি কমিটিতে ‘ইনচার্জ’ করেছেন নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তবে তাতেও দলবিরোধী মন্তব্য থেকে সরছেন না সব্যসাচী। শুধু তাই নয়, এ বার তিনি যা বললেন, সেটা সরাসরি তৃণমূলকে সমর্থন। আর তাতেই উৎসবের আবহে তাঁর দলবদলের জল্পনা নতুন করে তৈরি হল।

লখিমপুর খেরির ঘটনার নিন্দা করাই শুধু নয়, সেখানে তৃণমূল-সহ বিরোধীদের যেতে না দেওয়ার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন সব্যসাচী। আর তাতেই দিলীপের সঙ্গে দ্বৈরথ। মঙ্গলবার দিলীপ যোগী আদিত্যনাথের সরকারের পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে বলেছিলেন, ‘‘১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপই করেছে।’’ বুধবার সব্যসাচী বলেন, ‘‘কোনও আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়া পদ্ধতি হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক দেশ, এতো তালিবান শাসন নয়।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের পুজোর মুখেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে এসেছিলেন সব্যসাচী। ২০২০ সালেও একবার তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা তৈরি হয়েছিল। এখন পুজোর মরসুমে সেই একই জল্পনা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। মুকুল রায়ের হাত ধরেই বিজেপি-তে এসেছিলেন সব্যসাচী। তৃণমূলে থাকার সময়েই তাঁর বাড়িতে মুকুলের লুচি-আলুরদম খেতে যাওয়া নিয়ে হইচই শুরু হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। এখনও নাকি নিয়মিত ‘দাদা’ মুকুলের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। আবার এমনটাও জানা গিয়েছে, সব্যসাচীকে তৃণমূলে ফেরানো নিয়ে তাঁর বিরোধী হিসেবে পরিচিত শাসক দলের দুই বিধায়ক সুজিত বসু ও তাপস চট্টোপাধ্যায়ের আপত্তি এখনও রয়েছে।

বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র প্রচার পদ্ধতি ভুল ছিল বলে মন্তব্য করে গত জুন মাসেই বিতর্কের কেন্দ্রে আসেন সব্যসাচী। সেই সময়ে তিনি প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্যের নেতারা যে ভাষায় কথা বলেছেন তা বাংলার মানুষ বুঝতেই পারেননি।’’ এর পরে সম্প্রতি বিজেপি-র দুর্গাপুজো নিয়ে দিলীপের সঙ্গে দ্বৈরথ তৈরি হয় তাঁর। গত বছর মূলত সব্যসাচীর উদ্যোগেই বিজেপি-র সাংস্কৃতিক শাখা বিধাননগরের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে (ইজেডসিসি) ধুমধাম করে পুজো হয়। সূচনায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা দেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই বছর পুজো হবে কি না তা নিয়ে বিজেপি দোলাচলে থাকায় সব্যসাচী সংবাদমাধ্যমকে জানান, গতবার ভোট ছিল তাই পুজো হয়েছে। এ বার ভোট নেই তাই পুজোও নেই। এর প্রেক্ষিতেই দিলীপ বলেন, ‘‘বিধি অনুযায়ী পুজো হওয়া উচিত। ভোট দেখে পুজো হওয়া ঠিক নয়। যাঁরা পুজো করেছিলেন তাঁদের চিন্তাভাবনা করা উচিত।’’ যদিও শেষ পর্যন্ত বিজেপি-র পুজো নমো নমো করে হলেও একই জায়গায় হচ্ছে। দলের সহসভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দায়িত্ব রয়েছেন সব্যসাচীও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement