মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির মধ্যে বিশ্বাসের অভাব ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করল বম্বে হাই কোর্ট।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির মধ্যে বিশ্বাসের অভাব ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করল বম্বে হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি এম এস কার্নিকের বেঞ্চের মতে, মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের উচিত আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে ফেলা।
সম্প্রতি নানা বিষয়ে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট সরকার ও রাজ্যপালের বিরোধ সামনে এসেছে। পুণেতে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে নাম না করে রাজ্যপালকে নিশানা করেন উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার।
মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকার নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে দু’টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল বম্বে হাই কোর্টে। নানা পাটোলে প্রদেশ কংকগ্রেসের সভাপতি হওয়ার পরে বিধানসভার স্পিকারের পদ শূন্য রয়েছে। একটি মামলার আবেদনকারী বিজেপি বিধায়ক গিরীশ মহাজনের আইনজীবী মহেশ জেঠমলানী জানান, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সংশোধনী এনে স্পিকার নির্বাচনের পদ্ধতি বদল করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। নয়া পদ্ধতিতে কেবল মুখ্যমন্ত্রীই স্পিকার নির্বাচনের বিষয়ে রাজ্যপালকে পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু রাজ্যপালকে পরামর্শ দেওয়ার কথা একটি মন্ত্রিসভার। জেঠমলানী জানান, এই বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপ না করায় জনস্বার্থে আঘাত লাগছে।
কিন্তু আজ দু’টি মামলাই খারিজ করে হাই কোর্টের বিচারপতিরা বলেন, ‘‘কে বিধানসভার স্পিকার হলেন তা নিয়ে সাধারণ মানুষের কোনও আগ্রহই নেই। এই আদালতে কত জন লোকসভার স্পিকারের নাম বলতে পারবেন? স্পিকার বিধানসভার সদস্য। এতে জনস্বার্থ কোথায়?’’
প্রধান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত জানান, মহারাষ্ট্রের বিধান পরিষদে রাজ্যপালের মনোনীত ১২ জন সদস্যের মনোনয়ন নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের টানাপড়েন চলছে। গত বছরে হাই কোর্ট নির্দেশে জানিয়েছিল, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই সদস্যদের নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো রাজ্যপালের কর্তব্য। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটাতেও বলে হাই কোর্ট। বিচারপতি দত্তের বক্তব্য, ‘‘এখনও মনোনীত সদস্যদের নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাননি রাজ্যপাল। তাতে কি গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে? আমাদের গণতন্ত্র অত ভঙ্গুর নয়।’’ হাই কোর্টের মতে, ‘‘মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রে দুই সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদাধিকারী একে অপরকে বিশ্বাস করেন না। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আপনারা দয়া করে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে নিন।’’