প্রবীণ সিপিআইএম নেতা টমাস আইজ্যাক।
‘কেরল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বোর্ড’ (কেআইআইএফবি)-এর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের তদন্তের প্রেক্ষিতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রবীণ সিপিআইএম নেতা টমাস আইজ্যাককে বারবার সমন পাঠানোয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)-এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠল কেরালা হাই কোর্ট। এই ঘটনাকে ‘অন্যায়’ আখ্যা দিয়েছেন বিচারপতি ভিজি অরুণ। পাশাপাশি, আগামী দু’মাস এই মামলায় কোনও সমন জারি করা যাবে না বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। ইডি-কে তারা রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করছে বলে বিরোধীদের তরফে বারবার অভিযোগ উঠছে বিজেপির বিরুদ্ধে। এই ঘটনা তাতে ইন্ধন জোগাল বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
কেআইআইএফবি-র আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে সংস্থার প্রাক্তন প্রধান টমাসের পাশাপাশি সেখানকার অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্তাকে বহুবার সমন পাঠিয়েছে ইডি। যার বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন টমাস। একই সঙ্গে, এই তদন্তের বিরোধিতা করে মামলা দায়ের করে কেআইআইএফবি-ও। সংস্থার সিইও কে ম্যাথু অ্যাব্রাহাম এবং জয়েন্ট ফান্ড ম্যানেজার অ্যানি জে টমাসকে বারবার সমন পাঠানোর বিরুদ্ধেও চ্যালেঞ্জ জানানো হয় সেখানে। সঙ্গে উল্লেখ করা হয় যে ইডির এই তদন্তের জেরে উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
পাশাপাশি আদালতে ইডির বিরুদ্ধে করা তাঁর আবেদনে টমাসের দাবি করেন, শুধুমাত্র তিনি কেআইআইএফবি-এর প্রাক্তন প্রধান ছিলেন এবং বর্তমানেও সংস্থাটির সঙ্গে পরোক্ষ ভাবে জড়িত রয়েছেন বলে বারবার তাঁকে এ ভাবে ডেকে পাঠানো যায় না। সঙ্গে প্রাক্তন মন্ত্রীর তোপ, তিনি ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট (এফইএমএ) লঙ্ঘন করেছেন বলে সমনে উল্লেখ করা হলেও তার ব্যাখা দিতে পারেনি ইডি। ফলে এই সমন বেআইনি বলেই মনে করছেন তিনি। উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই টমাসকে সমন পাঠিয়ে ইডির সামনে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে তিরুঅনন্তপুরমে দলের পরিচালিত একটি স্কুলে ক্লাস নিতে যেতে হবে বলে তিনি ওই দিন আসতে পারবেন না বলে কেন্দ্রীয় সংস্থাটিকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এর পর অগস্টের প্রথম সপ্তাহে ফের হাজিরার নির্দেশ দিয়ে তাঁকে তলব করে সমন পাঠায় ইডি। তার পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন টমাস।
বিভিন্ন মামলার আড়ালে বিরোধীদের কোণঠাসা করতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে হাতিয়ার করছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি— মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যে বিরোধীদের তরফে ইদানীং এই অভিযোগ উঠেছে। কেরলের এই ঘটনা ফের সেই বিতর্ক উস্কে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।