কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। ছবি: পিটিআই।
কেরলের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিলেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। যদিও রাজ্যপালের এই নির্দেশকে উপেক্ষা করার জন্য ওই উপাচার্যদের পরামর্শ দিয়েছে কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার।
রবিবার কেরলের রাজ্যপালের টুইটার হ্যান্ডলে ওই ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ্যে এনেছে রাজভবন। সেই সঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের শুক্রবারের রায় বহাল রেখে কেরলের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যেগুলি সঙ্গে ছবিতে উল্লিখিত) উপাচার্যকে সরাসরি এই নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় রাজ্যপাল শ্রী আরিফ মহম্মদ খান।’’
রাজভবন সূত্রের দাবি, ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের সময় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-র নিয়ম মান্য করা হয়নি। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে ওই উপাচার্যদের ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। ঘটনাচক্রে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কেরলের ক্ষমতাসীন এলডিএফ সরকারের সমর্থকদের ধারাবাহিক বিক্ষোভের আবহেই এই নির্দেশ এসেছে।
রাজ্যপাল যে ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সরে দাঁড়াতে বলেছেন, তাঁদের মধ্যে কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভিপি মহাদেবন পিল্লাইয়ের আগামী ২৪ অক্টোবর অবসর নেওয়ার কথা। অন্য দিকে, এপিজে আব্দুল কালাম টেকনোলজিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমএস রাজশ্রীর নিয়োগ বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
রাজভবনের তরফে টুইটে দাবি, রাজশ্রীর নিয়োগের মতোই শীর্ষ আদালতের ২১ তারিখের রায়ের ভিত্তিতে বাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শীর্ষ আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, রাজশ্রীর নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ ভাবে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়নি। ওই পদের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য চ্যান্সেলারের কাছে কেব লমাত্র একটিই নাম ছিল। যা সার্চ কমিটির কাছে পাঠিয়েছিল কেরলের উচ্চশিক্ষা পর্ষদ। অথচ আইন অনুযায়ী, একাধিক প্রার্থীর মধ্যে থেকে উপাচার্য বাছাই করাই নিয়ম। রাজশ্রীর নিয়োগের ইউজিসি-র আইন মানা হয়নি বলে পর্যবেক্ষণ শীর্ষ আদালতের।
রাজভবন সূত্রের দাবি, রাজশ্রীর মতোই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েরও ইউজিসি-র আইন ভঙ্গ করা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে উপাচার্য পদে ৩ বা ৫ জনের বদলে ১টিই নাম সুপারিশ করেছে সার্চ কমিটি। যা ইউজিসি-র নিয়মবিরুদ্ধ।
এই আবহেই রাজ্যপালের নির্দেশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপীনাথ রবীন্দ্রন। তাঁর মতে, একমাত্র আর্থিক দুর্নীতি বা অসদাচারণের মামলা উঠলেই উপাচার্যদের ইস্তফার দাবি তোলা যায়। তিনি বলেন, ‘‘এমনকি, এ ক্ষেত্রেও নিজেদের পক্ষ জানানোর সুযোগ দেওয়া উচিত। তার পর তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।’’ রাজভবনকে সরাসির চ্যালেঞ্জের সুরে তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি পদত্যাগ করব না। দেখি ওরা কী করতে পারে!’’