নাম্বি নারায়ণন। —ফাইল চিত্র।
কেরিয়ারের মধ্যগগনে থাকতেই নামের পাশে সেঁটে গিয়েছিল ‘দেশদ্রোহী’ তকমা। চরবৃত্তির অভিযোগে জেলও খাটতে হয়েছিল তাঁকে। সেই বদনাম কাটিয়ে উঠতে দু’দশকেরও বেশি সময় লেগে গিয়েছিল। তবে এত দিনে প্রকৃত অর্থে ‘সুবিচার’ পেলেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র প্রাক্তন বিজ্ঞানী নাম্বি নারায়ণন। চরবৃত্তির ভুয়ো অভিযোগ এনে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলে আদালতে কেরল সরকারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছিলেন তিনি। ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছিলেন। সেই মামলায় মঙ্গলবার তাঁকে দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিল রাজ্য সরকার।
২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টে চরবৃত্তির অভিযোগ থেকে রেহাই পান ৭৯ বছরের নাম্বি নারায়ণন। ভুয়ো অভিযোগ এনে তাঁকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছিল বলে মেনে নেয় শীর্ষ আদালতও। সেইসময়ই ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা পান নাম্বি নারায়ণন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশে আরও ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু সারাজীবন ধরে যে বদনাম বয়ে বেড়িয়েছেন নাম্বি নারায়ণ, তার জন্য এই টাকা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বলা হয়, চাইলে নিম্ন আদালতে আরও ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে পারেন তিনি।
সেই মতো তিরুঅনন্তপুরমের দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হন নাম্বি নারায়ণন। তাঁর সঙ্গে সমঝোতায় আসতে প্রাক্তন মুখ্যসচিব কে জয়কুমারকে দায়িত্ব দেয় কেরল সরকার। নাম্বি নারায়ণনের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে আদালতে নির্দিষ্ট অঙ্কের ক্ষতিপূরণের সুপারিশ করেন তিনি। তার পরেই ক্ষতিপূরণ বাবদ দেড় কোটি টাকার চেক পৌঁছে যায় নাম্বি নারায়ণনের কাছে। চেক হাতে পেয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি খুশি। তবে শুধুমাত্র টাকার জন্য লড়াই করিনি আমি। বরং অন্যায় এবং অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গিয়েছি।’’
আরও পড়ুন: এখনও সঙ্কটজনক, প্রণবের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি
আরও পড়ুন: ফ্ল্যাট থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধ
১৯৯৪-এর নভেম্বরে ইসরো গুপ্তচর কাণ্ডে কয়েক জন বিজ্ঞানীর সঙ্গে গ্রেফতার হন নাম্বি নারায়ণন। বলা হয়, পাকিস্তানকে গোপন তথ্য পাচার করেছেন তাঁরা। তার জন্য দু’মাস জেলও খাটেন নাম্বি নারায়ণ। পরে কেরল পুলিশের হাত থেকে মামলা সিবিআইয়ের হাতে গেলে মুক্তি পান তাঁরা। সিবিআই জানিয়ে দেয়, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। পরবর্তী কালে নাম্বি নারায়ণন দাবি করেন, ইসরো চর-কাণ্ড আসলে একটি আন্তর্জাতিক ছক। যা ভারতে রকেটে তরল জ্বালানি ব্যবহারের প্রযুক্তিকে ১৫ বছর পিছিয়ে দেয়।