কেদারনাথ ভ্রমণের ভয়ানক অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন সাগর বহুগুণা। ছবি: সংগৃহীত।
দুর্ঘটনার খবর শুনেই তাঁর হাত-পা ঠান্ডা হয়ে অসাড় হয়ে গিয়েছিল। ঘণ্টাখানেক আগে তো ওই পথ দিয়েই হেলিকপ্টারে করে গুপ্তকাশী থেকে কেদারনাথে পৌঁছেছিলেন। তাঁর সঙ্গেও তো এ রকম ঘটনা ঘটতে পারত! এ কথা বলতে বলতে শিউরে উঠছিলেন সাগর।
হৃষিকেশের বাসিন্দা সাগর বহুগুণা। চার বন্ধুর সঙ্গে কেদারনাথ ভ্রমণে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকালে গুপ্তকাশী থেকে কেদারনাথের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন হেলিকপ্টারে। তাঁদের হেলিকপ্টার অবতরণ করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই খবর পান, গুপ্তকাশীতে যাওয়ার জন্য যে হেলিকপ্টারটি রওনা দিয়েছিল, সেটি ছয় যাত্রীকে নিয়েই মাঝপথে ভেঙে পড়েছে।
‘অমর উজালা’কে এক সাক্ষাৎকারে সাগর বলেন, “আমি এখনও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ার খবর পেয়েই একের পর এক ফোন আসছিল। মা-বাবা, বন্ধুরা উদ্বিগ্ন ছিলেন খবরটা শোনার পর থেকে।”
সাগর ফোন ধরতে না পারায় তাঁরা আরও চিন্তায় পড়ে যান। পরে এক এক করে সকলকে ফোন করে তিনি জানান যে, সুরক্ষিত আছেন। সাগর বলেন, “আমার গলার আওয়াজ শুনে সকলেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল।” কিন্তু হেলিকপ্টারের টিকিট কাটতে গিয়ে যাঁদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল, তাঁদের কী হল? তাঁর কি ওই কপ্টারে ছিলেন? তাঁরা নিরাপদে আছেন তো? এই প্রশ্নগুলিই সাগরের মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল। আর ততই তাঁর অস্থিরতা বাড়ছিল বলে দাবি করেছেন বছর ছাব্বিশের এই যুবক।
তিনি বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরই সেই সব পরিচিতদের ফোন করি। ওঁরা সকলেই পঞ্জাবের বাসিন্দা ছিলেন। ফোন বাজছিল, কিন্তু না ধরায় হৃদ্কম্পন বেড়ে গিয়েছিল আমার। বার দুয়েক চেষ্টার পর সকলের সঙ্গে কথা বলতে পেরে নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম।” এই প্রথম বার কেদারনাথ দর্শনে গিয়েছিলেন সাগর। কিন্তু প্রথম ভ্রমণেই যে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার শিকার হলেন, তা কখনও ভুলবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাগরের অভিযোগ, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই হেলিকপ্টার সংস্থার। টিকিট বুক করতে গিয়েও ভয়ানক অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন বলে দাবি সাগরের। শুধু তা-ই নয়, হেলিকপ্টারে বসার পর কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা-ও বলে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ সাগরের।
১৮ অক্টোবর সকাল ১১টা ৩৬ মিনিটে কেদারনাথ থেকে গুপ্তকাশী যাওয়ার সময় তীর্থযাত্রীদের নিয়ে পাহাড়ে ভেঙে পড়ে হেলিকপ্টার। সেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পাইলট-সহ সাত জনের।