অভিযুক্তের ঘরের মেঝে খুঁড়ে স্ত্রীর দেহাংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
স্ত্রীকে খুন করে ঘরের ভিতরে তাঁর দেহ পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠল কেরলের এর্নাকুলামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুধু তাই-ই নয়, ওই ঘরে দেড় বছর ধরে থাকছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম সঞ্জীব। ২০২১ সালের অগস্টে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান সঞ্জীবের স্ত্রী রম্যা। পাড়াপড়শি এবং আত্মীয়রা রম্যাকে বেশ কিছু দিন ধরে দেখতে না পাওয়ায় সঞ্জীবকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তাঁর স্ত্রী কোথায়। তখন তিনি দাবি করেছিলেন, রম্যা অন্য এক জনের সঙ্গে ঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। এ ভাবে প্রায় ৬ মাস কাটিয়ে দিয়েছিলেন সঞ্জীব।
পুলিশের যাতে কোনও সন্দেহ না হয় এবং পাড়াপড়শিরা যাতে রম্যার পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা বিশ্বাস করেন, তাই খুনের ৬ মাস পরে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নারাক্কাল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন সঞ্জীব। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে রম্যা পালিয়ে গিয়েছেন বলে মাস ছয়েক আগে পড়শিদের জানিয়েছিলেন সঞ্জীব। সেই সময় থানায় অভিযোগ না জানিয়ে ঘটনার ৬ মাস পরে কেন নিখোঁজ ডায়েরি করলেন সঞ্জীব, তা নিয়ে সন্দেহ হয় পুলিশের।
সঞ্জীবের অভিযোগ পুলিশ নিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তাঁর গতিবিধির উপরও নজর রাখছিলেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারী জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে সঞ্জীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু পুলিশও তলে তলে প্রমাণ সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছিল। পাড়াপড়শি, আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে বেশ কয়েকটি সূত্র পেয়েছিল পুলিশ। সেই সূত্র ধরে এগোতে সঞ্জীবের বাড়িতে তল্লাশি চালায় তারা। তখন তদন্তকারীদের নজরে আসে ঘরের মেঝেতে এক জায়গা একটু এবড়োখেবড়ো হয়ে রয়েছে। তবে সেখানে নতুন করে সিমেন্টও মারা হয়েছিল। আর ওই মেঝে খুঁড়তেই বেরিয়ে আসে এক মহিলার দেহাংশ।
এর পরই পুলিশ সঞ্জীবকে গ্রেফতার করে। তাঁকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ফোনে কথা বলা নিয়ে রম্যার সঙ্গে বচসা হয়েছিল তাঁর। আর সেই রাগেই তাঁকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ ঘরের মধ্যে পুঁতে দিয়েছিলেন। পড়শিদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, সঞ্জীব তাঁদের জানিয়েছিলেন, খুব শীঘ্রই বিয়ে করতে চলেছেন তিনি। শুধুই বচসার জেরে খুন, না কি অন্য কোনও রহস্য আছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।