বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত এই হোটেল ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। তার আগে সরানো হচ্ছে জলের ট্যাঙ্ক। বৃহস্পতিবার জোশীমঠে। ছবি: পিটিআই ।
১২ দিনে মাটির নীচের দিকে আরও প্রায় সাড়ে পাঁচ সেন্টিমিটার ধসে গিয়েছে ডুবন্ত জোশীমঠ! এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পাশাপাশি শুরু হল ওই জনপদের বিপদের সীমারেখায় থাকা দু’টি বিলাসবহুল হোটেল ভাঙার কাজ। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার (এনআরএসসি) সম্প্রতি একটি উপগ্রহ চিত্রও প্রকাশ্যে এনেছে, যেখানে ভূমিধসের ছাপ স্পষ্ট। এনআরএসসি জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর এই সাত মাসে জোশীমঠের জমি ধসেছে প্রায় ৯ সেন্টিমিটার। অথচ গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি এই ১২ দিনে ওই শহরের ভূমিধসের হার হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। যা ৫.৪ সেমি। যে কারণে গাড়োয়াল হিমালয়ের এই জনপদে বিপর্যয় এবং অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই জোশীমঠ খালি করতে আরও তৎপর হয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। শুরু হয়েছে ‘মালারি ইন’ এবং ‘মাউন্ট ভিউ’ হোটেল ভাঙার কাজ। সরকারের তরফে এই দুই হোটেল দু’টি নিরাপদ নয় বলে ঘোষণা করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই লাল সতর্কতা জারি করা ঘরবাড়িগুলিও ভাঙা শুরু হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
প্রশাসন হোটেল এবং বাড়িঘর ভাঙার ঘোষণা করতেই প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন জোশীমঠের সাধারণ মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা এবং হোটেল মালিকদের দাবি ছিল, ক্ষতিপূরণ না পেলে তাঁরা নিজেদের ভিটে ছেড়ে নড়বেন না। কিন্তু এর মধ্যেই সরকারের তরফে প্রাথমিক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়ায় বিক্ষোভ শান্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২ জানুয়ারি থেকে শুরু করে বিগত কয়েক দিনে জোশীমঠের ৭৬০-এরও বেশি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। চওড়া ফাটল দেখা গিয়েছে সেই শহরের রাস্তা-মন্দির-জমিতে। আতঙ্কে রাতারাতি ভিটেমাটি ছাড়া সেই শহরের বহু মানুষ। ঠাঁই হয়েছে আশ্রয় শিবিরে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৬৯টি পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে। জোশীমঠকে ‘বসবাসের অযোগ্য’ বলেও ঘোষণা করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। তবে এই পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনের তরফে করা উন্নয়নকেই দায়ী করেছেন স্থানীয়রা।