আধুনিক অস্ত্রধারী চোরাশিকারিদের মোকাবিলায় কাজিরাঙার বনকর্মীদের হাতেও ‘একে-৪৭’ তুলে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করলেন বনমন্ত্রী প্রমীলারানি ব্রহ্ম। কাজিরাঙায় শিকার রোধে বিস্তর ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও চলতি বঠরে ১৮টি গন্ডারকে প্রাণ দিতে হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বনরক্ষীদের মোকাবিলায় শিকারিরা ব্যবহার করেছে একে সিরিজের রাইফেল বা মার্কিন এম-১৬ রাইফেল। আধুনিক স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের মোকাবিলায় বনরক্ষীদের হাতে এখন থাকে .৩১৫ বা .৩০৩ সিরিজের মান্ধাতা আমলের রাইফেল।
ইতিমধ্যেই ফরেস্ট ব্যাটেলিয়ানের জওয়ানদের হাতে দেওয়া হয়েছে এসএলআর। কিন্তু তার লড়ার ক্ষমতাও একে-৪৭ এর সমান নয়। তাই বনমন্ত্রী জানান, ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরে বনরক্ষীদের হাতেও একে-৪৭ ও ইনস্যাস রাইফেল তুলে দেওয়া হবে। প্রথম দফায় ৫০ জন বাছাই বনরক্ষীর হাতে দেওয়া হবে স্বয়ংক্রিয় এই রাইফেল। কাজিরাঙার সুরক্ষার কাজে ১১২ জন তরুণ-তরুণীকে নিয়োগ করার আশ্বাসও দেন তিনি।
এ দিকে, গুয়াহাটির লাগোয়া আমসাং অভয়ারণ্যের জবরদখল সরেজমিনে দেখতে গিয়ে দখলদারদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বনমন্ত্রী। পানিখাইতি থেকে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে পাহাড়ের উপরে দখলকারীদের ঝুপড়ি দেখে তিনি তাঁদের অবিলম্বে জঙ্গলের জমি খালি করতে বলেন। কিন্তু জবরদখলকারী পরিবারগুলির মহিলারা উল্টে মন্ত্রীকেই ঘিরে ধরেন। দাবি করেন, তাঁরা ব্রহ্মপুত্রের ওপার থেকে ভূমিক্ষয়ে জমি হারিয়ে এ পারে এসেছেন। বন কর্মীদের রীতিমতো টাকা দিয়ে জমি কিনে ঘর গড়েছেন তাঁরা। রয়েছে রেশন কার্ডও।
তাঁদের কথা শুনে হতবাক বনমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়েন সঙ্গে থাকা বনকর্তারা। যে সব বনকর্মী টাকা নিয়ে জবরদখলে মদত দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তারা জানান, ওই পরিবারগুলিকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হলেও তারা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ আনায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। মন্ত্রী আমসাংকে জবরদখল মুক্ত করতে আইন মেনে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
অন্য দিকে, নগাঁওয়ের চাপর এলাকায় জবরদখল হঠাতে গিয়ে দখলদারদের আক্রমণে জখম হন বনকর্মীরা। চান্দডিঙা এলাকায় অরণ্যভূমি জবরদখল করে রাখা পরিবারগুলিকে উচ্ছেদ করতে গিয়েছিল পুলিশ ও বনরক্ষী বাহিনী। কিন্তু রুখে দাঁড়ায় দখলদার পরিবারগুলি। তারা জওয়ানদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামলাতে শূন্যে গুলি চালায় পুলিশ। পাথরের ঘায়ে জখম হয়েছেন একাধিক বনকর্মী।