অনেক সময় মর্গে মৃতার সঙ্গে যৌনতার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিশেষ পর্যবেক্ষণ কর্নাটক হাই কোর্টের। —প্রতীকী চিত্র।
শবদেহের সঙ্গে যৌন সংসর্গ ভারতীয় সংবিধানে অপরাধ নয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় একে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়নি। বুধবার এমনই পর্যবেক্ষণ কর্নাটক হাই কোর্টের। শবদেহের সঙ্গে যৌন মিলনকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার জন্য কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ওই উচ্চ আদালত।
অনেক সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহ পাহারা দেওয়ার জন্য নিযুক্তদের কেউ কেউ মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সংসর্গ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। কর্নাটক হাই কোর্ট ‘নেক্রোফিলিয়া’ (শবদেহের সঙ্গে যৌনতা) সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে ভারতীয় দণ্ডবিধির সংশোধনের জন্য সুপারিশ করেছে। অস্বাভাবিক যৌনতার অপরাধের সংজ্ঞা নিরূপণ তথা নেক্রোফিলিয়াকে অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করার জন্য প্রয়োজনে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে নতুন আইন আনারও কথা বলে বিচারপতি ভি বিরাপ্পা এবং বিচারপতি নায়েকের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত ইংল্যান্ড, কানাডা, নিউজ়িল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার আইনের কথা উল্লেখ করে বলে ওই সব দেশে নেক্রোফিলিয়া একটি অপরাধ। কিন্তু ভারতে এটা অপরাধ নয়। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এ নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও আইন প্রণয়ন করা হয়নি যেখানে মৃতার দেহের সম্মান এবং সেই সংক্রান্ত অপরাধের কথা বলা হয়েছে।’’
এক ২৫ বছর বয়সি তরুণীকে হত্যার পর ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তের মামলা শুনতে বসেছিল আদালত। হত্যার পর মৃতার সঙ্গে যৌন নির্যাতনের জন্য ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করে নিম্ন আদালত। কিন্তু হাই কোর্ট অভিযুক্তকে কেবল খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে। ধর্ষণের সাজা থেকে তাঁকে নিষ্কৃতি দিয়েছে। হাই কোর্টের যুক্তি, মৃতার দেহের উপর যৌন নিপীড়নকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা (অস্বাভাবিক যৌনাচার) দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। কারণ, এ নিয়ে আইনে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই। তাই বিষয়টি কেন্দ্রকে চিন্তাভাবনার পরামর্শ দিয়ে বেশ কর্নাটক সরকারকে বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছে সে রাজ্যের হাই কোর্ট। বলা হয়েছে ৬ মাসের মধ্যে মৃতদেহ সংরক্ষণের জায়গা যেমন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের মর্গগুলিতে সিসিটিভি বসাতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে আরও কড়া নজরদারি চালাতে হবে।