(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কর্নাটক সরকার। শনিবার শীর্ষ আদালতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একটি হলফনামা জমা দিয়েছে সিদ্দারামাইয়া সরকার। তাতে আবেদন করা হয়েছে, জাতীয় খরা ত্রাণ তহবিলের অর্থ দিতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিক দেশের শীর্ষ আদালত।
কর্নাটকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘‘খরায় বিপর্যস্ত সারা রাজ্য। এ নিয়ে কেন্দ্রকে একটি রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী, রিপোর্ট পাওয়ার এক মাসের মধ্যে পদক্ষেপ করার কথা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ত্রাণ তহবিলের ব্যাপারে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।’’ তিনি জানান, চলতি বছরে ৪৮ লক্ষ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে কর্নাটকে। এ নিয়ে তিন বার কেন্দ্রকে তাঁরা তথ্য দিয়েছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘‘আমি নিজে প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছি। এমনকি, প্রধানমন্ত্রী মোদী যে সম্প্রতি কর্নাটকে এসেছিলেন, তখনও খরা পরিস্থিতির কথা স্মরণ করিয়েছি। কিন্তু তার পরও কেন্দ্রের তরফে কোনও সাহায্য আসেনি।’’
বস্তুত, প্রবল জলসঙ্কটে ভুগছে গোটা কর্নাটক। বেঙ্গালুরুতে জলের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। জলের ঘাটতি প্রসঙ্গে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার দাবি করেন, ‘‘গত তিন-চার দশকে এমন খরা পরিস্থিতি দেখিনি।’’ সেই সঙ্গে তিনি রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে জানান, আগামী দু’মাস ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ’। জলসঙ্কট মোকাবিলায় বেঙ্গালুরুতে যত কূপ আছে তার মধ্যে প্রায় ৭ হাজার কূপ নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। শিবকুমার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য জল সরবরাহ করতে পর্যাপ্ত ট্যাঙ্করের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ স্থানীয়দের পাশে দাঁড়াতে সরকারের তরফে হেল্পলাইন নম্বর খোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে একাধিক কাজ, যেমন, গাড়ি ধোয়া, নির্মাণকাজ, বিনোদন সংক্রান্ত কোনও কাজে জল ব্যবহার করা যাবে না বলেও জানায় বেঙ্গালুরু প্রশাসন।
গত ডিসেম্বরে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়ার। তিনি জানিয়েছিলেন কী ভাবে বৃষ্টির অভাবে রাজ্যের হাহাকার অবস্থা হয়েছে। জলকষ্ট নিয়েও কথা বলেছেন সম্প্রতি। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে কোনও সাহায্য মিলছে না বলে অভিযোগ করেছে কর্নাটক সরকার।
অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নানা বঞ্চনার অভিযোগ করেছে। বাংলার সরকার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আবাস যোজনা থেকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ করে আসছে। বস্তুত, আসন্ন লোকসভা ভোটে একেই ইস্যু করে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।