ক্ষমতায় ফিরেই পুলিশকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ সিদ্দারামাইয়ার। — ফাইল ছবি।
ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের পুলিশকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। বিধানসৌধের সভাগৃহে আয়োজিত বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দার স্পষ্ট ঘোষণা, রাজ্যে কোনও রকম গুন্ডামি বরদাস্ত করবে না তাঁর সরকার। মানুষ বদলের প্রত্যাশায় তাঁদের জিতিয়েছেন। মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণের ক্ষেত্রে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে চলবে কংগ্রেস সরকার।
মঙ্গলবার বিধানসৌধের সভাগৃহে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকর্তাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলেন রাজধানী বেঙ্গালুরুর ট্র্যাফিক সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে। প্রসঙ্গত, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি রাজধানী বেঙ্গালুরুর বাকি সব কিছুকে ছাপিয়ে তার ট্র্যাফিক সমস্যাই ইদানীং মুখ্য হয়ে উঠছে। ক্ষমতায় ফিরে সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে মনোযোগ দিচ্ছে কংগ্রেস সরকার। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দার নির্দেশ, ট্রাফিক সমস্যার সমাধানকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পাশাপাশি সিদ্দা জানিয়ে দেন, ‘‘মানুষ বহু প্রত্যাশা নিয়ে নতুন সরকারকে ক্ষমতায় এনেছেন। তাই মানুষের প্রত্যাশা পূরণের দিকেই একমাত্র নজর দিতে হবে।’’
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দার পাশাপাশি হাজির ছিলেন, উপমুখ্যমন্ত্রী শিবকুমার, মন্ত্রী কেজে জর্জ, কেএইচ মুনিয়াপ্পা, বিজ়েড জ়ামির আহমেদ খান, এমপি পাটিল, সতীশ জারকিহোলি প্রমুখ।
কর্নাটককে হিন্দুত্বের গবেষণাগার হিসাবে তুলে ধরতে অভ্যস্ত কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। বিজেপিও তার প্রকাশ্য সমর্থক। কিন্তু সাম্প্রতিক ভোটে সেই হিন্দুত্বের গবেষণাগারের তত্ত্বই বড় ধাক্কার মুখে পড়েছে। চেষ্টা সত্ত্বেও সাম্প্রদায়িক মেরুকরণে ভাঙা যায়নি কর্নাটকবাসীকে। এ বার উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির বাড়বাড়ন্ত রোধে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার বার্তা দিলেন সিদ্দা। তিনি বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে ভুয়ো পোস্টদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে যেন পুলিশ কার্পণ্য না করে।’’
থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়েরের ক্ষেত্রে অনেকেই সমস্যার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। সে ব্যাপারেও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সিদ্দা বলেন, ‘‘সিনিয়র পুলিশ অফিসারেরা নিয়ম করে থানা পরিদর্শনে যাবেন। সেখানে গিয়ে সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথাও শুনতে হবে তাঁদের। পুলিশ যেন মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার না করে তা সব সময় মাথায় রাখতেই হবে।’’
কর্নাটক, বিশেষ করে রাজধানী বেঙ্গালুরুতে ক্লাব-কালচারের রমরমা। তাতে বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগও ওঠে। এ ব্যাপারে পুলিশকে সতর্ক করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘থানা এলাকার মধ্যে সমস্ত ধরনের বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ করতে পুলিশকে উদ্যোগী হতে হবে। আমার সরকার গুন্ডামি, বেআইনি ক্লাব অথবা ড্রাগ মাফিয়াদের বরদাস্ত করবে না।’’
পাশাপাশি সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারেও পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যদি সামাজিক শান্তি বিঘ্নিত হয় তাহলে প্রথম দায়ভার নিতে হবে পুলিশকেই। তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।